স্বলাতুল আউয়াবীন

স্বলাতুল আউয়াবীন

সহিহ হাদীছের আলোকে স্বলাতুল আউয়াবীন
জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর স্বলাত- এর অংশবিশেষ
শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিন

মাগরিবের পর ‘স্বলাতুল আউয়াবীন’ পড়ার প্রমাণে কোন সহিহ দলীল নেই। উক্ত মর্মে যে সমস্ত বর্ণনা পাওয়া যায়, তার সবই জাল বা মিথ্যা।

(أ) عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ مَنْ صَلَّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ سِتَّ رَكَعَاتٍ لَمْ يَتَكَلَّمْ فِيْمَا بَيْنَهُنَّ بِسُوْءٍ عُدِلْنَ لَهُ بِعِبَادَةِ ثِنْتَيْ عَشْرَةَ سَنَةً.

(ক) আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের স্বলাতের পর ৬ রাক‘আত স্বলাত পড়বে কিন্তু মাঝেকোন ত্রুটিপূর্ণ কথা বলবে না, তার জন্য উহা ১২ বছরের ইবাদতের সমান হবে’।[1]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল। ইমাম তিরমিযী বলেন,

حَدِيْثُ أَبِىْ هُرَيْرَةَ حَدِيْثٌ غَرِيْبٌ لَا نَعْرِفُهُ إِلَّا مِنْ حَدِيْثِ زَيْدِ بْنِ الْحُبَابِ عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِىْ خَثْعَمٍ قَالَ وَسَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَعِيْلَ يَقُوْلُ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِىْ خَثْعَمٍ مُنْكَرُ الْحَدِيْثِ وَضَعَّفَهُ جِدًّا.

আবু হুরায়রা বর্ণিত হাদীছটি গরীব। আমরা ওমর ইবনে আবী খাছ‘আম কর্তৃক বর্ণিত যায়েদ ইবনু হুবাবের হাদীছ ছাড়া আর কিছু জানি না। ইমাম বুখারীকে ওমর ইবনে আব্দুল্লাহ আবী খাছ‘আম সম্পর্কে বলতে শুনেছি যে, সে অস্বীকৃত রাবী। তিনি তাকে নিতান্তই যঈফ বলেছেন’।[2]

(ب) عَنْ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ قَالَ مَنْ صَلَّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ عِشْرِيْنَ رَكْعَةً بَنَى اللهُ لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ.

(খ) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ২০ রাক‘আত স্বলাত আদায় করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন।[3]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল। এর সনদে ইয়াকূব ইবনু ওয়ালীদ মাদানী নামে একজন রাবী আছে। ইমাম আহমাদসহ অন্যান্য মুহাদ্দিছ তাকে মিথ্যুক বলেছেন।[4]

(ج) عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ مَنْ صَلَّى مَا بَيْنَ صَلاَةِ الْمَغْرِبِ إِلَى صَلاَةِ الْعِشَاءِ فَإِنَّهَا صَلاَةُ الْأَوَّابِيْنَ.

(গ) মুহাম্মাদ ইবনু মুনকাদির বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি মাগরিব থেকে এশা পর্যন্ত স্বলাত আদায় করবে সেটা তার জন্য ‘স্বলাতুল আউওয়াবীন’ হবে।[5]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি যঈফ। এর সনদে আবু ছাখর নামে যঈফ রাবী আছে। সে মুহাম্মাদ ইবনু মুনকাদির-এর যুগ পায়নি।[6]

জ্ঞাতব্য : মাওলানা মুহিউদ্দীন খান বলেন, ‘মাগরিবের পরে ছয় রাকআত, একে আওয়াবীনও বলা হয়।… আওয়াবীন স্বলাতের সর্বাধিক রাকআত সংখ্যা বিশ। দু’ কিংবা চার রাকআতও জায়েয। নবী (ﷺ) আওয়াবীনের অনেক ফযীলত বর্ণনা করেছেন’।[7] ‘নবীজীর স্বলাত’ শীর্ষক বইয়ে ড. ইলিয়াস ফায়সাল মাগরিবের পর অতিরিক্ত স্বলাত আদায় করার দাবী করেছেন। তার প্রমাণে একটি উদ্ভট বর্ণনা পেশ করেছেন।[8] এটা বিভ্রান্তি ছাড়া কিছু নয়। অবশ্য মাওলানা নূর মোহাম্মদ আ’জমী (রহঃ) লিখেছেন, ‘মাগরিবের পরের ছয় রাকআতের নাম ‘স্বলাতুল আওয়াবীন’ বলিয়া কোন হাদীসে উল্লেখ নাই’।[9]

[1]. তিরমিযী হা/৪৩৬, ১/৯৮ পৃঃ; ইবনু মাজাহ হা/১১৬৭; মিশকাত হা/১১৭৩, পঃ ১০৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১১০৫, ৩/৯৫ পৃঃ।
[2]. যঈফ তিরমিযী হা/৬৬, পৃঃ ৪৮-৪৯; সিলসিলা যঈফাহ হা/৪৬৯; যঈফুল জামে‘ হা/৫৬৬১।
[3]. তিরমিযী হা/৪৩৬, ১/৯৮ পৃঃ; মিশকাত হা/১১৭৪, পৃঃ ১০৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১১০৬, ৩/৯৫ পৃঃ।
[4]. তাহক্বীক্ব মিশকাত হা/১১৭৪-এর টীকা দ্রঃ।
[5]. ইবনু মুবারক, কিতাবুয যুহদ, পৃঃ ১৪; ইবনু নছর, কিতাবুল কিয়াম, পৃঃ ৪৪।
[6]. সিলসিলা যঈফাহ হা/৪৬১৭।
[7]. তালীমুস্-স্বলাত, পৃঃ ১৭৬-১৭৭।
[8]. ঐ, পৃঃ ২৮২।
[9]. বঙ্গানুবাদ মিশকাত ৩য় খন্ড, পৃঃ ১৫৫।

সহিহ হাদীছের আলোকে ‘স্বলাতুল আউয়াবীন’ :

হাদীছে একই স্বলাতকে তিনটি নামে উল্লেখ করা হয়েছে। পূর্ব আকাশে সূর্য উঠার সাথে সাথে পড়লে তাকে ‘স্বলাতুল ইশরাক্ব’, সূর্য একটু উপরে উঠার পর আদায় করলে ‘স্বলাতুয যোহা’ এবং আরো একটু উপরে উঠার পর আদায় করলে তাকে ‘স্বলাতুল আউয়াবীন’ বা ‘আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনশীল বান্দাদের স্বলাত’ বলা হয়েছে। যেকোন একটি পড়লেই চলবে। যেমন-

(أ) عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِىْ جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ تَامَّةٍ تَامَّةٍ تَامَّةٍ.

(ক) আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি জামা‘আতের সাথে ফজর স্বলাত আদায় করবে অতঃপর সূর্য উঠা পর্যন্ত বসে বসে যিকির করবে; তারপর দুই রাক‘আত স্বলাত আদায় করবে, তার জন্য পূর্ণ একটি হজ্জ এবং পূর্ণ একটি ওমরার নেকী রয়েছে।[1] অন্য হাদীছে এসেছে,

(ب) عَنْ بُرَيْدَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ يَقُوْلُ فِى الإِنْسَانِ ثَلاَثُمِائَةٍ وَسِتُّوْنَ مَفْصِلاً فَعَلَيْهِ أَنْ يَتَصَدَّقَ عَنْ كُلِّ مَفْصِلٍ مِنْهُ بِصَدَقَةٍ قَالُوْا وَمَنْ يُطِيْقُ ذَلِكَ يَا نَبِىَّ اللهِ قَالَ النُّخَاعَةُ فِى الْمَسْجِدِ تَدْفِنُهَا وَالشَّىْءُ تُنَحِّيْهِ عَنِ الطَّرِيْقِ فَإِنْ لَمْ تَجِدْ فَرَكْعَتَا الضُّحَى تُجْزِئُكَ.

(খ) বুরায়দা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, মানুষের দেহে তিনশ’ ষাটটি গ্রন্থি রয়েছে। তাই প্রত্যেক গ্রন্থির বিনিময়ে ছাদাক্বাহ করা উচিত। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! কার পক্ষে এটা সম্ভব? তিনি বললেন, মসজিদ থেকে থুথু মুছে দিবে এবং রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্ত্ত সরিয়ে দিবে। এটা না পারলে চাশতের দুই রাক‘আত স্বলাত আদায় করবে।[2] স্বলাতুল আউয়াবীন

(ج) عَنْ زَيْدَ بْنِ أَرْقَمَ أَنَّهُ رَأَى قَوْمًا يُصَلُّوْنَ مِنَ الضُّحَى فَقَالَ أَمَا لَقَدْ عَلِمُوْا أَنَّ الصَّلاَةَ فِىْ غَيْرِ هَذِهِ السَّاعَةِ أَفْضَلُ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ صَلاَةُ الأَوَّابِيْنَ حِيْنَ تَرْمَضُ الْفِصَالُ.

(গ) যায়েদ ইবনু আরকাম (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি কিছু লোককে চাশতের স্বলাত আদায় করতে দেখেন। অতঃপর বলেন, তারা অবগত আছে যে, এই সময়ের চেয়ে অন্য সময়ে পড়া অধিক উত্তম। নিশ্চয় রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘স্বলাতুল আউয়াবীন’ তখন পড়বে, যখন উটের বাচ্চা রৌদ্রে তাপ অনুভব করে।[3]

অতএব মাগরিবের পর স্বলাতুল আউয়াবীন নামে কোন স্বলাত নেই। তাই উক্ত তিন সময়ের মধ্যে যেকোন এক সময়ে উক্ত স্বলাত আদায় করলেই যথেষ্ট হবে। কিন্তু সূর্য উঠার পর পরই পড়লে ফযীলত অনেক বেশী। সুতরাং জাল ও যঈফ হাদীছ পরিত্যাগ করে সহিহ হাদীছের দিকে ফিরে যাওয়াই একজন মুছল্লীর কর্তব্য।

জ্ঞাতব্য : ‘স্বলাতুল আউয়াবীন’-এর রাক‘আত সংখ্যা সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ আট।[4] ১২ রাক‘আত পড়ার যে হাদীছ রয়েছে তা যঈফ।[5] এর সনদে মূসা ইবনু ফুলান ইবনু আনাস নামে অপরিচিত রাবী আছে।[6]

[1]. তিরমিযী হা/৫৮৬, ১/১৩০ পৃঃ; মিশকাত হা/৯৭১, পৃঃ ৮৯; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৯০৯, ৩/৬ পৃঃ, ‘স্বলাতের পর যিকির’ অনুচ্ছেদ।
[2]. আবুদাঊদ হা/৫২৪২, ২/৭১১ পৃঃ; মিশকাত হা/১৩১৫, পৃঃ ১১৬, সনদ সহিহ; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১২৩৯, ৩/১৫৭ পৃঃ।
[3]. সহিহ মুসলিম হা/১৭৮০ ও ১৭৮১, ১/২৫৭ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৬১৬), ‘মুসাফিরের স্বলাত’ অনুচ্ছেদ-১৯; মিশকাত হা/১৩১২, পৃঃ ১১৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১২৩৭, ৩/১৫৬ পৃঃ।
[4]. বুখারী হা/১১৭৬, ১/১৫৭ পৃঃ, (ইফাবা হা/১১০৬, ২/৩২১ পৃঃ), ‘তাহাজ্জুদ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৩১; মুসলিম হা/১৭০৪; মিশকাত হা/১৩১১, ১৩০৯, পৃঃ ১১৫ ও ১১৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১২৩৪ ও ১২৩৬, ৩/১৫৫-৫৬ পৃঃ।
[5]. ইবনু মাজাহ হা/১৩৮০, পৃঃ ৯৮; তিরমিযী হা/৪৭৩; মিশকাত হা/১৩১৬, পৃঃ ১১৬।
[6]. আলবানী, মিশকাত হা/১৩১৬-এর টীকা দ্রঃ, ১/৪১৩ পৃঃ।

(৪) মাগরিব স্বলাতের পর চার রাক‘আত সুন্নাত পড়া :

মাগরিবের পর কেবল দুই রাক‘আত সুন্নাত স্বলাত আদায় করতে হবে। এরপর দাঁড়িয়ে বা বসে আরো দুই রাক‘আত স্বলাত আদায়ের সহিহ কোন দলীল নেই।

عَنْ مَكْحُوْلٍ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ قَالَ مَنْ صَلَّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ قَبْلَ أَنْ يَتَكَلَّمَ رَكْعَتَيْنِ وَفِىْ رِوَايَةٍ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ رُفِعَتْ صَلَاتُهُ فِىْ عِلِّيِّيْنَ.

মাকহূল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেন, যে ব্যক্তি মাগরিব স্বলাতের পর কোন কথা বলার পূর্বেই দুই রাক‘আত অন্য বর্ণনায় এসেছে, চার রাক‘আত পড়বে তার স্বলাতকে ‘ইল্লীইনে’ উঠানো হবে।[1]

তাহক্বীক্ব : যঈফ। এর সনদে আবু ছালেহ নামে একজন যঈফ রাবী আছে।[2]

[1]. রাযীন, ইবনু নছর, ক্বিয়ামুল লাইল, পৃঃ ৩১; মিশকাত হা/১১৮৪, পৃঃ ১০৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১১১৬, ৩/৯৮ পৃঃ।
[2]. তাহক্বীক্ব মিশকাত হা/১১৮৪-এর টীকা দ্রঃ, ১/৩৭১ পৃঃ; যঈফ আত-তারগীব হা/৩৩৫।

(৫) ফরয স্বলাতের স্থানে সুন্নাত স্বলাত আদায় করা :

সুন্নাত স্বলাত আদায় করার সময় স্থান পরিবর্তন করা রাসূল (ﷺ)-এর আদর্শ। কিন্তু অধিকাংশ মসজিদে মুছল্লীরা ফরয স্বলাতের স্থানেই সুন্নাত স্বলাত আদায় করে থাকে। স্থান পরিবর্তন করার প্রয়োজন মনে করেন না।

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ قَالَ أَيَعْجِزُ أَحَدُكُمْ إِذَا صَلَّى أَنْ يَتَقَدَّمَ أَوْ يَتَأَخَّرَ أَوْ عَنْ يَمِيْنِهِ أَوْ عَنْ شِمَالِهِ يَعْنِى السُّبْحَةَ.

আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল (ছঃ) বলেছেন, তোমরা কি সক্ষম হবে যখন সে স্বলাত আদায় করবে তখন সামনে বা পিছনে কিংবা ডানে বা বামে সরে যাবে? অর্থাৎ সরে গিয়ে সুন্নাত আদায় করবে।[1]

উক্ত হাদীছে স্থান পরিবর্তন করে সুন্নাত স্বলাত আদায় করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এমনকি ইমামকেও তার স্থানে সুন্নাত পড়তে নিষেধ করা হয়েছে।[2]

[1]. ইবনু মাজাহ হা/১৪২৭, পৃঃ ১০৩; আবুদাঊদ হা/১০০৬, ১/১৪৪ পৃঃ, ‘স্বলাত’ অধ্যায়, ‘সুন্নাত স্বলাত ফরয স্বলাতের স্থান থেকে সরে গিয়ে পড়া’ অনুচ্ছেদ।
[2]. আবুদাঊদ হা/৬১৬, ১/৯১; ইবনু মাজাহ হা/১৪২৮, পৃঃ ১০৩।