সারা বিশ্বে বর্তমান ও বিগত শতাব্দীর কিছু আহলুল ইলমদের তালিকা

আসসালা-মু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লা-হি ওয়া বারাকা-তুহু।
সমস্ত নবী-রসূলগণের পর আল্লাহর সৃষ্টির সেরা হলেন উলামাগণ। তবে অবশ্যই বিদআতি, হিজবি, ভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট আলেম নয়। বরং আহলুস সুন্নাহর আলেম-উলামা, যারা মানহাজ আস-সালাফিয়্যাহ এর উপর প্রতিষ্ঠিত এবং মানুষের জন্য হিদায়াতের দিক-নির্দেশক। তারাই সৃষ্টির সেরা ও আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বান্দা এবং আল্লাহর কাছে তাদের মর্যাদা সবচেয়ে বেশি। কারণ তারাই মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী এবং তারাই আল্লাহকে সবচেয়ে বেশি ভঁয় করেন এবং তারাই নবী-রসূলগণের ওয়ারিশ তথা উত্তরাধিকারী অর্থাৎ তারাই নবী-রসূলগণের রেখে যাওয়া দ্বীনের ‘ইলমের প্রচার-প্রসার করেন ও মানুষের মাঝে তা বিতরণ করেন এবং মানুষকে দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
তবে দূর্ভাগ্যবশত হলেও সত্য যে, দিন যত যাবে প্রকৃত আলেম-উলামাদের সংখ্যা ততই কমতে থাকবে, যা কিয়ামতের লক্ষণ সমূহের মধ্যে একটি। ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক, ইমাম শাফে’ঈ, ইমাম আহমাদ প্রমুখের মতো ইমাম আর আসবে না। তাদের পরবর্তীকালের ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, প্রমুখের মতো হাদীসের বিখ্যাত ইমাম আর আসবে না। তার পরবর্তীকালের ইমাম ইবনে তাইমিয়ার মতো ইমাম আর আসবে না। ইমাম আব্দুল ওয়াহহাবের মতো ইমামের আর জন্ম হবে না। ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম, ইমাম আয-যাহাবী, ইমাম ইবনে কাসীর, ইমাম নববী, ইমাম ইবনে হাজার আসকালানীর মতো মহামতি ইমামদের আর আগমন ঘটবে না। তাদের মতো করে তাদের শূন্যস্থান আর পূর্ণ হবে না। শাইখ আল-আমীন শাংকিতী, শাইখ বিন বায, শাইখ আলবানী, শাইখ উসায়মিন, শাইখ মুক্ববিল, প্রমুখের মতো শ্রেষ্ঠ উলামা যারা মাত্র বিগত ৫০ বছরের মধ্যে গত হয়েছেন, তাদের মতোও শ্রেষ্ঠ উলামা আর হবে না। একইভাবে এখন বর্তমানে অল্প সংখ্যক যে কিছু জেনুইন উলামাদের মতো উলামা জীবিত আছেন, তারাও যখন চলে যাবেন, তাদের মতো করে তাদের স্থান আর পূর্ণ হবে না। তারা সকলেই জীবনের দীর্ঘ সময় পার করে এখন মৃত্যুর অতি নিকটে। এভাবে দুনিয়া থেকে উলামাদের সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকবে এবং মানুষ জাহেলদের কাছ থেকে দ্বীনের ‘ইলম হাসিল করতে উদ্যত হবে ও গোমরাহ হবে, যা কিয়ামতের লক্ষণ।
<<<>>> বর্তমানে জীবিত কিছু আহলুল ইলম <<<>>>

==============<><><>==============

১। শাইখ রাবী’ বিন হাদী আল-মাদখালী (সৌদি আরব)
২। শাইখ সালিহ ইবনে ফাওযান আল-ফাওযান (সৌদি আরব)
৩। শাইখ সালিহ আল-লুহায়দান (সৌদি আরব)
৪। শাইখ উবায়দ ইবনে ‘আব্দুল্লাহ আল-জাবিরী (সৌদি আরব)
৫। শাইখ মুহাম্মাদ বিন হাদী আল-মাদখালী (সৌদি আরব)
৬। শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ আল-শাইখ (সৌদি আরব)
৭। শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে রাবী’ আল-মাদখালী (সৌদি আরব)
৮। শাইখ সালিহ ইবনে ‘আব্দুল ‘আযীয আল-শাইখ (সৌদি আরব)
৯। শাইখ ‘আব্দুল মুহসিন আল-‘আব্বাদ (সৌদি আরব)
১০। শাইখ ‘আব্দুর রাজ্জাক ইবনে ‘আব্দুল মুহসিন আল-‘আব্বাদ আল-বদর (সৌদি আরব)
১১। শাইখ সালিহ আস-সুহায়মি (সৌদি আরব)
১২। শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে রমযান আল-হাজিরি (সৌদি আরব)
১৩। শাইখ মুহাম্মাদ বিন ইব্রাহীম আত-তুআইজিরী (সৌদি আরব)
১৪। শাইখ ‘আলী ইবনে নাসীর আল-ফাক্বীহী (সৌদি আরব)
১৫। শাইখ ‘আব্দুল্লাহ আল-বুখারী (সৌদি আরব)
১৬। শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে ‘আব্দুল ওয়াহহাব আল-‘আক্বীল (সৌদি আরব)
১৭। শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে ‘উমার বাযমূল (সৌদি আরব)
১৮। শাইখ আহমাদ ইবনে ‘উমার বাযমূল (সৌদি আরব)
১৯। শাইখ ‘আলী আল-হুযাইফী (সৌদি আরব)
২০। শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয ইবনে ‘আব্দিল্লাহ আর-রাজিহি (সৌদি আরব)
২১। শাইখ ‘আলী আল-হাদ্দাদী (সৌদি আরব)
২২। শাইখ ‘আব্দুল মুহসিন আল-উবায়কান (সৌদি আরব)
২৩। শাইখ মুহাম্মাদ বিন ‘আব্দুল ওয়াহহাব আল-ওয়াসসাবি (ইয়েমেন)
২৪। শাইখ আবুল ‘আব্বাস ‘আদিল ইবনে মনসুর (ইয়েমেন)
২৫। শাইখ নু’মান আল-ওয়াতর (ইয়েমেন
২৬। শাইখ তারিক ইবনে হুসাইন সুবা’ঈ (কুয়েত)
২৭। শাইখ আবু মুহাম্মাদ আহমাদ সুবা’ঈ (কুয়েত)
২৮। শাইখ খালিদ আয-যাফিরি (কুয়েত)
২৯। শাইখ আবু উসমান মুহাম্মাদ আল-আনজারি (কুয়েত)
৩০। শাইখ হাসান ইবনে ‘আব্দুল ওয়াহহাব মারযুক আল-বান্নাহ (মিশর)
৩১। শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে সা’ঈদ রাসলান (মিশর)
৩২। শাইখ খালিদ বিন মুহাম্মাদ ‘উসমান আল-মিশরি (মিশর)
৩৩। শাইখ খালিদ বিন আব্দুর রাহমান আল-মিশরি (মিশর)
৩৪। শাইখ ‘আদিল সাইয়্যিদ (মিশর)
৩৫। শাইখ মুহাম্মাদ ‘আলী ফিরকউস (আলজেরিয়া)
৩৬। শাইখ ওয়াসিউল্লাহ আব্বাস (ইন্ডিয়া)
৩৭। শাইখ মাহের ইবনে যাফির আল-কাহতানি (খুব সম্ভবত ইয়েমেন)
৩৮। শাইখ সুলায়মান আর-রুহায়লী (দেশ করতে পারিনি)
৩৯। শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে আদম আল-ইথিওবি (দেশ বের করতে পারিনি)
৪০। শাইখ ‘আব্দুল্লাহ ‘আতীক্ব আল-হারবী (দেশ বের করতে পারিনি)
৪১। শাইখ তারাহীব আদ-দাওসিরী (দেশ বের করতে পারিনি)
৪২। শাইখ ‘আব্দুল্লাহ ইবনে ‘উমার আল-আদানী (দেশ বের করতে পারিনি)
৪৩। শাইখ যাইদ আল-দাওসারী (দেশ বের করতে পারিনি)
৪৪। শাইখ তা’লাত যাহরান (দেশ বের করতে পারিনি)
৪৫। শাইখ আবু রাবী’ আহমাদ আয-যাহরানী (দেশ বের করতে পারিনি)
৪৬। শাইখ জামাল আল-হারিথী (দেশ বের করতে পারিনি)
৪৭। শাইখ ‘আব্দুস সালাম আস সিহায়মি(দেশ বের করতে পারিনি)
………………….…(হাফিযাহুমুল্লা-হ)
[বি.দ্র.:- উক্ত জীবিতদের লিস্টে একেবারে সকলকেই কিবার উলামা বলা যায় না, তবে তারা উলামা। তাদের মধ্যে অল্পকিছু হলেন কিবারুল উলামা। তাহলে যেখানে তাদের ভেতর থেকেই সবাইকে কিবার বলা যায় না, সেখানে যারা পাইকারি হারে ভারত উপমহাদেশ থেকেই কিবারুল উলামাদের লিস্ট দিতে ব্যস্ত ও তৎপর, সেটা অতি চিন্তার বিষয়। ভারত উপমহাদেশ থেকে এমনিতে ‘আলিম পর্যায়ে ধরা যায় শাইখ ওয়াসিউল্লাহ আব্বাস (হাফিযাহুল্লাহ)-কে (যেখানে সেরকম পর্যায়ের ‘আলিম বর্তমানে উপমহাদেশে পাওয়া যায় না), তবে তিনি কিবারের মধ্যে পড়েন কিনা তা আল্লাহই ভাল জানেন। তবে তিনি অবশ্যই একজন আহলুস সুন্নাহর ‘আলিম]
<<<>>> বর্তমান ও বিগত শতাব্দীতে যেসব কিবারুল উলামাগণ গত হয়েছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন <<<>>>

==============<><><>==============

১। ‘আল্লামাহ শাইখ মুহাম্মাদ আল-আমীন আশ-শাংকিতী (আদওয়া-উল-বাইয়ান এর তাফসীরকারক) (মৌরতানিয়া)
২। ‘আল্লামাহ শাইখ ‘আব্দুর রহমান ইবনু নাসির আস-সা’দী (তাফসীর আস-সা’দী এর তাফসীরকারক) (সৌদি আরব)
৩। ‘আল্লামাহ শাইখ তাকিউদ্দীন আল-হিলালী (কুরআনের বিখ্যাত ইংলিশ অনুবাদ “The Noble Quran” এর লেখক) (মরক্কো)
৪। ‘আল্লামাহ শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (সৌদির বিগত গ্র্যান্ড মুফতি এবং বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ফক্বীহদের মধ্যে একজন) (সৌদি আরব)
৫। ‘আল্লামাহ শাইখ নাসিরউদ্দীন আল-আলবানী (বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দীসদের মধ্যে একজন) (আলবেনিয়া)
৬। ‘আল্লামাহ শাইখ সালিহ আল-উসায়মিন (বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফক্বীহ) (সৌদি আরব)
৭। ‘আল্লামাহ শাইখ বদিউদ্দীন শাহ আর-রাশিদি আস-সিন্ধী (পাকিস্তান)
৮। ‘আল্লামাহ শাইখ মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়া’দী (ইয়েমেন)
৯। ‘আল্লামাহ শাইখ মুহাম্মাদ আমান আল-জামী (ইথিয়োপিয়া)
১০। ‘আল্লামাহ শাইখ ‘আব্দুর রাজ্জাক আফীফি (মিশর)
১১। ‘আল্লামাহ শাইখ ‘আব্দুল্লাহ ইবনে গুদাইয়্যান (সৌদি আরব)
১২। ‘আল্লামাহ শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে ‘আব্দিল্লাহ আস-সোমালী (সোমালিয়া)
১৩। ‘আল্লামাহ শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে ‘আব্দুল ওয়াহহাব মারযুক্ব আল-বান্না (মিশর)
১৪। ‘আল্লামাহ শাইখ আহমাদ আন-নাজমী (সৌদি আরব)
১৫। ‘আল্লামাহ শাইখ বদিউদ্দীন শাহ আর-রাশদি আস-সিন্ধী (পাকিস্তান)
১৬। ‘আল্লামাহ শাইখ যাইদ বিন হাদী আল-মাদখালী (সৌদি আরব)
………………….…(রহিমাহুমুল্লা-হ)
[বি.দ্র.:- আমাদের উপমহাদেশে সেরকম পর্যায়ের ‘উলামা পূর্বে ছিলেন এবং আজও অতি সামান্য সংখ্যক আছেন। তবে অবশ্যই বিভিন্ন আরব দেশ থেকে তূলনমূলকভাবে কম। আমরা কখনই বলি না যে, উপমহাদেশে কোনো উলামা নেই বা ছিল না, যা আমাদের উপর কিছু মানুষ মিথ্যারোপ করে, ইচ্ছ্বাবশত করে হোক আর অনিচ্ছ্বাবশত হোক। বিগত শতাব্দীতেও তিন তিনজন “মুবারকপুরী”-উলামা গত হয়েছেন, যা ‘উলামাদের লিস্টের এই পোস্টে দেয়া হয়েছে। কাজেই, অপবাদকারী আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের উচিত আল্লাহকে ভঁয় করা]