শহীদের মর্যাদা পাওয়ার উপায়

প্রথমে জেনে নিন শহীদদের কি বিশাল মর্যাদা আল্লাহর কাছে-

মিকদাদ ইবনু মাআদী কারাব (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “আল্লাহর নিকট শহীদের জন্য ৬টি বিশেষ পুরস্কার রয়েছে। (১) শরীরের রক্তের প্রথম ফোঁটা ঝরতেই তাকে মাফ করে দেওয়া হয় এবং প্রাণ বের হওয়ার প্রাক্কালে জান্নাতের মধ্যে তার অবস্থানের জায়গাটি চাক্ষুষ দেখানো হয়। (২) কবরের আযাব হতে তাঁকে নিরাপদে রাখা হয়। (৩) ক্বিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা হতে তাঁকে নিরাপদে রাখা হয়। (৪) তার মাথায় সম্মান ও মর্যাদার মুকুট পরানো হবে। তার একটি ইয়াকুত দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে সমস্ত কিছু হতে উত্তম। (৫) তার স্ত্রী হিসেবে বড় বড় চক্ষু বিশিষ্ট ৭২ জন হুর দেওয়া হবে। (৬) তার নিকট আত্মীয়দের মধ্য হতে ৭০ জনের জন্য সুপারিশ কবুল করা হবে।(সহিহ তিরমীযী হাদিস-১৬৬৩)

যুদ্ধের ময়দানে শহীদ হওয়ার পাশাপাশি আমলের মাদ্ধমেও যাদেরকে শহীদের মর্যাদা দেওয়া হবে-

১- সলাত, যাকাত, সিয়াম, ও তারাবীর সলাতের হেফাযতকারিকে-

আমর ইবনু মুররাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত । তিনি বলেন ,কুযা’আহর এক লোক রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে এসে বললো : আমি সাক্ষ্য দেই যে আল্লাহ্‌ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। আর আপনি আল্লাহ্‌র রাসুল। আমি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করি, রমযান মাসের সওম পালন করি ও রামাযানের তারাবীহ সালাত আদায় করি এবং যাকাত দেই। এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন : “যে ব্যাক্তি এর উপর মৃত্যু বরন করবে সে সিদ্দীকগন ও শহীদগণের অন্তর্ভুক্ত”।(সহীহ ইবনে খুজাইমা হাদিস-২২১২, তাহকিক আলবানি, সনদ সহিহ, সহিহ তারগিব-৭৪৫)

২- সৎ ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ীকে-

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : “সৎ ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ী (ক্বিয়ামতের দিন) নবীগণ, সিদ্দীকগন ও শহীদ্গনের সাথে থাকবে।(শাইখ আলবানি (রঃ) হাদিসটিকে সহিহ লিগাইরিহি বলেছেন সহীহ আত-তারগীব গ্রন্থে হাদিস-১৭৮২, মাকতাবা শামেলা)

৩- রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর সুন্নাতের অনুসরণকারিকে-

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, নিশ্চয়ই তোমাদের পিছনে রয়েছে ধৈর্যের যুগ। সে সময়ে যে ব্যক্তি সুন্নাতকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে থাকবে, সে তোমাদের সময়ের ৫০ জন শহীদের নেকী পাবে।(ত্বাবারানী, আল-মুজামুল কাবীর / হাদিস-১০২৪০; নাসিরুদ্দিন আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিস আস সহিহাহ, সহিহুল জামে/ হাদিস-২২৩৪)

৪- স্ত্রী সন্তান, সম্পদ, জীবন ও স্বীয় দ্বীনের হিফাজতের জন্য নিহত বেক্তিকে-

হযরত আবুল আওয়ার সাইদ ইবনে যায়েদ ইবনে আমর ইবনে নুফায়ল (আশারাহ মুবাশশিরাহ অর্থাৎ পৃথিবীতে জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ১০ জন সাহাবীর অন্তর্ভুক্ত) বর্ণনা করেন, আমি রাসুল (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি তার ধনমালের হেফাজতের কারণে নিহত হয়েছে সে শহিদ। আর যে ব্যক্তি নিজের জীবনের হেফাজতের কারণে নিহত হয়েছে সেও শহিদ। যে ব্যক্তি স্বীয় দ্বীনের হেফাজতকালে নিহত হয়েছে সেও শহিদ আর যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রী-সন্তানদের হেফাজতকালে নিহত হয়েছে সেও শহিদ। (রিয়াদুস সলেহিন-১৩৬৪, আবুদাউদ-৪৭৭২, তিরমিযি-১৪১৮, ১৪২১ ইমাম তিরমিযি বলেন হাদিসটি হাসান সহিহ)

আল্লাহ তা’লা আমাদের নিষ্ঠার সাথে আমলগুলো করার মাদ্ধমে সৌভাগ্যবান হওয়ার তাওফিক দান করুন, আমীন।