প্রেমের বিয়ে কেন টিকেনা?

একদল তরুণ-তরুণী হালাল প্রেমের নামে পাপের সাগরে ডুবে থাকে। বোরখা পরে, পর্দা করে বা গায়ে পাঞ্জাবী দিয়ে ৫ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করে প্রেমকে কখনো হালাল করা যায়না। যেভাবেই হোক না কেন একজন ছেলে ও মেয়ের মাঝের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক হারাম।

আল্ট্রা মডার্নের এই যুগে ছেলে-মেয়ের বিবাহের জন্য নাকি আগে থেকে আন্ডারস্ট্যান্ডিং লাগে। কাছে আসার গল্পের নামে কিছুদিন গুণাহের সাগরে হাবুডুবু খাওয়া লাগে। এই ভাবে বিয়ে হলে নাকি সংসার ভাল হয়। ডাহা মিথ্যা কথা। মরীচিকা বৈ কিছুই নয়।

প্রেমের বিয়ে কিভাবে বরকতময় হতে পারে অথচ এর শুরুই হয়েছে মহান আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে। আল্লাহর রাগকে সাথে করে নিয়ে কিভাবে সুখের সংসার হয়?

প্রেমের সম্পর্ক চলাকালীন ছেলে-মেয়ে উভয়ে নিজেকে ভাল হিসেবে উপস্থাপনের আপ্রাণ চেষ্টা করে। এক প্রকার মিথ্যা অভিনয় করে যায়। এই মিথ্যা অভিনয় থেকে সৃষ্টি হয় পরস্পরের প্রতি অগাঢ চাহিদা ও আশা। উভয়ে ভাবতে থাকে সে আমার জন্য পারফেক্ট। বিয়ের পর মিথ্যা অভিনয় আর থাকেনা। এক ছাদের নীচে বাস্তব জীবন শুরু হয়। মানুষ তো আর কেউ দুধে ধোয়া তুলসী পাতা নয়। আশা অনুযায়ী আর ফল পাওয়া যায়না। শুরু হয় টানাপোড়েন। প্রেম করে বিয়ে করার ফলে অধিকাংশ সময়ই দুই পরিবারের মাঝে দূরত্ব থেকে যায়। এই টানাপোড়েনে তখন মাথার ছায়া হয়ে অভিজ্ঞ কেউ আর ইন্টারফেয়ার করতে আসেনা। একটি সংসার ভেংগে যায়। স্বপ্ন মাটিতে আছড়ে পড়ে।

অন্যদিকে অজানা অচেনা একটা ছেলে বা মেয়ে প্রথম ভালভাবে কথা ও দেখার সুযোগ পায় বাসর ঘরে। পরস্পরে এক প্রকার আশংকা সাথে নিয়ে ও আশার পারদ একদম নিম্নে রেখে সংসার শুরু করে। উভয়ের আশংকা যেন বাস্তবে রুপ না নেয় এই জন্য উভয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করে ভালটা দেওয়ার। সাথে থাকে মহান রব্বের সন্তুষ্টি। মাথার ছায়া হিসেবে থাকে অভিজ্ঞ পরিবারের অভিভাবক মন্ডলী। একটি সংসারে ধীরে ধীরে ভালবাসার বীজ রোপিত হয়। যতদিন যায় আল্লাহ চাইলে সেটা বাড়তে থাকে। বৃদ্ধ বয়সে সেই মায়ার টানটা আরো বেশী হয়। এক অকৃত্রিম ভালবাসা ও মায়া। মিডিয়ার রঙ্গীন জগতের নায়ক-নায়িকারা আদর্শ কাপল নয়। আদর্শ কাপল এরাই। আদর্শ কাপল আমাদের মা ও বাবারা। আমাদের দাদা ও দাদীরা। আমাদের নানা ও নানীরা।

মরীচিকার পিছনে ছুটতে থাকা প্রিয় যুবক-যুবতী ভাই ও বোনেরা এখনি লাগাম দাও! ক্ষণিকের কলুষিত ভালবাসার চেয়ে চিরন্তন নিষ্কলুষ ভালবাসা অনেক শ্রেয়।