ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী মানুষের মাঝে আত্মীয়তার সম্পর্ক তিনভাবে হতে পারে

=> ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী মানুষের মাঝে আত্মীয়তার সম্পর্ক তিনভাবে হতে পারেঃ
(১) জন্ম সূত্রে, রক্তের সম্পর্ক।
(২) বিবাহের মাধ্যমে।
(৩) দুধ মায়ের দুধ পানের মাধ্যমে।
প্রথম দুই প্রকার আত্মীয়তার দ্বারা উত্তরাধিকারী হয়। কিন্তু তৃতীয় প্রকার সম্পর্ক দ্বারা শুধু সম্পর্ক স্থাপন হয়, কিন্তু উত্তরাধিকার হয় না।
=> পাতানো বাপ-মা, ভাই-বোন, উকিল বাবার কোন সম্পর্ক ঈসলাম অনুমোদন করেনা। তাদের সাথে পূর্ণাংগ পর্দা করা ফরয।
=> ঈমানদার ছেলে-মেয়েকে কখনো ত্যাজ্য পুত্র করা যায় না। ত্যাজ্য পুত্র করে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং তাকে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা সম্পূর্ণ হারাম এবং সীমা লংঘন।

=> “দত্ত্বক” নেওয়া অর্থাৎ অন্য কারো সন্তানকে নিজের সন্তান পরিচয় দিয়ে বড় করা সম্পূর্ণ হারাম এবং কবীরাহ গুনাহ। সুরা আহজাবঃ ৫, বুখারী, মুসলিমঃ ৩৯৮২, মুসলিমঃ ২৪৩৩।
তবে কোন ব্যক্তি অন্য কারো পুত্র বা কন্যা সন্তান পালক নিয়ে তাকে লালন পালন করতে পারে। তবে কিছু শর্ত রয়েছে।
(১) সন্তানকে তার পিতার নামেই পরিচিত করা হবে, পালক পিতার সাথে সম্পর্কিত করা যাবে না।
(২) পুত্র সন্তান এবং কন্যা সন্তান “মাহরাম” না হলে তার সাথে হিজাব পর্দা রক্ষা করতে হবে এবং একাকী অবস্থান করা বা সফর করা যাবে না। যেমন কেউ তার ভাইয়ের ছেলেকে লালন পালন করে, তাহলে সেই ছেলের সামনে তার স্ত্রী এবং কন্যা সন্তানদেরকে (যদি থাকে) তাহলে পর্দা করতে হবে। অনুরূপভাবে কোন মহিলা যদি তার বোনের মেয়েকে পালন করে, তাহলে তার স্বামীর সামনে ঐ মেয়েকে পর্দা করতে হবে।
(৩) পালক পুত্র উত্তরাধিকারী হবে না বা তাকে উইল করে উত্তরাধিকারী বানানো যাবে না। তবে ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী তাকে কিছু সম্পদ “ওসীয়ত” করে দেওয়া যাবে।
(৪) পালক বাবা-মাকে ভালোবেসে বাবা মা ডাকতে পারে, তবে মূল পিতা মাতার সম্পর্ককে অস্বীকার করা বা গোপন করা যাবেনা।
(৫) পালক সন্তান তার মূল পিতা-মাতার উত্তরাধিকারী হবে, সেখান থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
(৬) যারা পালক পুত্র নেন, তাদের উচিত এমন ছেলে বা মেয়ে কাউকে নেওয়া যাতে করে তাদের স্বামী-স্ত্রীর সাথে হিজাব পর্দার বাধা না থাকে।
(৭) সন্তানের বয়স দুই বছর হওয়ার পূর্বে দুধ পানের দ্বারা মাহরামের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত করা যায়। এমনকি নিঃসন্তান মহিলা ঔষধ খেয়ে কৃত্তিমভাবে বুকের দুধ উতপাদন করে দুই বছরের পূর্বে কোন বাচ্চাকে খাওয়ালে সে তার “মাহরাম” হবে।
(৮) পালক নেওয়া সম্পর্কিত বাংলাদেশে প্রচলিত আইন ইসলামী আইনের সাথে সাংঘর্ষিক। আপনারা এই ব্যপারে সাবধান থাকবেন। যারা ইতিমধ্যেই ভুল করে ফেলেছেন, তারা সংশোধন করার আপ্রাণ চেষ্টা করুন।
যাদের প্রয়োজন, তারা বিস্তারিত আলেমদের কাছ থেকে জেনে নিবেন ইন শা আল্লাহ।

 

>>>কৃতজ্ঞতাঃ- তোমরা তোমাদের পালনকর্তার অভিমূখী হও এবং তাঁর আজ্ঞাবহ হও<<<