হিযবুত তাওহীদ এবং হিযবুত তাহরীর নামক দুইটি পথভ্রষ্ট বিদআতী দলের গোমরাহী

হিযবুত তাওহীদ এবং হিযবুত তাহরীর নামক দুইটি পথভ্রষ্ট বিদআতী দলের গোমরাহী

********************************************************************************************************************
‘হিযবুত তাওহীদ’ নামক দলটির প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছে বায়েজীদ খান পন্নী, যার বাড়ি হচ্ছে টাংগাইল। তাদের প্রশংসা ও গুণ-গান লিখে শেষ করা যাবেনা। নীচে তার সামান্য কিছু উল্লেখ করা হলো।
(১) বায়েজীদ খান পন্নী নিজেকে ‘ইমাম মাহদী’ কখনোবা ‘যামানার ইমাম’ হিসেবে দাবী করেছিলো। অথচ সে ইমাম মাহদী হওয়াতো দূরের কথা, ছোট একটা মসজিদের মুয়াজ্জিন হওয়ার মতো শুদ্ধ উচ্চারণে ক্বুরান তেলাওয়াত ও আরবী উচ্চারণ করতে পারতোনা।
(২) হিযবুত তাওহীদের অনুসারীরা খারেজীদের মতো নিজেদের ছাড়া অন্য সমস্ত মুসলমানদেরকে এবং মুসলমান শাসকদেরকে কাফের বলে ফতোয়া দিয়েছে এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ওয়াজিব(!) বলে ঘোষণা করেছে।
(৩) তারা মক্কা ও মদীনার সমস্ত ইমাম এবং আলেমদেরকে ‘কাফের’ বলে ফতোয়া দিয়েছে, নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক! একারণে তারা হাজ্জীদেরকে মক্কা মদীনার ইমামদের সাথে সালাত আদায় করতে নিষেধ করে। তাদের মতে মক্কা মদীনার ইমামদের ঈমান নেই, অথচ তারা নিজেরাই ঈমান শব্দটা আরবীতে লিখতে ও পড়তে পারবেনা।
(৪) দুর্বল চিত্ত এবং কম বুদ্ধির নারীদেরকে তারা সহজেই প্রতারিত করে। হিযবুত তাওহীদ দলে যোগ দিয়ে অনেক নারী তাদের স্বামীদেরকে তাদের পথে নেওয়ার চেষ্টা করে। তাদের স্বামীরা নতুন দলে ভর্তি নাহলে স্বামীকে ফেলে অন্য পুরুষের সাথে পালিয়ে যায়। এমন বেশ কিছু কেলেংকারী তারা করেছে।
(৫) পুরুষদেরকে তাদের দলে ভর্তি করার জন্যে তারা প্রায়শই তাদের দলের নারী কর্মীদেরকে ‘টোপ’ হিসেবে ব্যবহার করে। যেমন চেহারা খুলা, আধা-হিজাবী নারীদেরকে দিয়ে তাদের লিফলেট বিতরণ ও বই বিক্রি করা।
(৬) তারা বিশ্বাস করে দাজ্জাল কোন মানুষ নয়, ইয়াহুদী-খ্রীস্টানরাই হচ্ছে দাজ্জাল। দাজ্জাল এবং কেয়ামতের আলামত সম্পর্কে বেশ কিছু হাদীসের মারাত্মক অপব্যখ্যা করে অনেক লোকদের বিভ্রান্ত করেছে।
(৭) ইসলামী রাষ্ট্র নেই, এই যুক্তিতে তারা যাকাত দেওয়া ফরয বলে মনে করেনা বা বর্তমান যুগে যাকাত কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় বলে তাদের অনেকেই মনে করে।
(৮) তারা ৩-৪টা ক্বুরানের আয়াতের বাংলা অর্থ ছাড়া ইসলাম সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেনা। আর যেই আয়াতগুলো তারা খুব বেশি প্রচার করে সেইগুলোর সঠিক অর্থ ও তাফসীর তারা নিজেরাও জানেনা।
(৯) হিযবুত তাওহীদের যুবক ভাইয়েরা, আর অল্প বয়সী বোকা লোকেরাই তাদের ধোঁকায় বেশি পড়ে, তাদের কেউ দাঁড়ি রাখেনা। তারা মনে করে, ইসলামী রাষ্ট্র নেই, ইয়াহুদীরা বায়তুল মাকদিস দখল করে রেখেছে, মুসলমানদেরকে হত্যা ও নির্যাতন করছে, সুতরাং দাড়ি রেখে কি লাভ? এভাবে তারা নিজেরাই ইসলাম থেকে দূরে থাকে, আবার তারাই নাকি বিশ্বে ইসলাম কায়েম করবে!
(১০) পন্নী সাহেব তার অনুসারীদেকে আর্মিদের কুচকাওয়াজ করার মতো করে সালাত পড়তে শিক্ষা দিয়েছে। তাদের সালাত পড়া যারা দেখেছে, না হেসে পারা যায়না। এদের সালাত পড়া দেখলে একজন সাধারণ মানুষও বুঝতে পারবে, তারা কত বড় মূর্খ ও পথভ্রষ্ট।
(১১) এরা অনেক হাদীসকে অস্বীকার করে এবং নিজের মনমতো ক্বুরআনের আয়াতের অপব্যখ্যা করে।
(১২) বায়েজীদ খান পন্নীর ছবি বা ভিডিও যারা দেখেছেন, কোন পাগলেও কোনদিন তাকে একজন ‘আলেম’ বলে দাবী করবেনা।
সর্বশেষ, ‘হিযবুত তাওহীদ’ নামক দলটি স্পষ্ট খারেজী আকীদাহর অনুসারী, জংগি ও বিদ্রোহী একটি দল। এদের ব্যপারে সাধারণ মুসলমানদেরকে সতর্ক করা আমাদের জন্য ওয়াজিব।
.
প্রায় কাছাকাছি নামে আরেকটি বিদআ’তী দলের নাম হচ্ছে “হিযবুত তাহরীর”। তাদের নেতা হচ্ছে তাকিউদ্দিন নাবাহানী নামে একজন লোক। ইয়েমেনের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, শায়খ মুক্ববিল বিন হাদী রাহি’মাহুল্লাহ বলেন, “হিযবুত তাহরীরের জন্ম হয়েছিলো জর্ডানে, তাকিউদ্দীন নাবাহানীর হাতে। প্রথমে তারা ছিলো ইখোয়ানি (মুসলিম ব্রাদারহুড, আমাদের দেশের ‘জামাতে ইসলামী’র মতো মিশরীয় একটা দল), পরে তারা সেই দল ত্যাগ করে নতুন দল গঠন করে। ‘হিযবুত তাহরীর’ একটি পথভ্রষ্ট দল, কারণঃ
(১) তারা মানুষের চিন্তাপ্রসূত জ্ঞানকে ক্বুরআন ও হাদীস থেকে বেশি প্রাধান্য দেয়। এ কারণে তারা কবরের আজাবের কথা বিশ্বাস করেনা, দাজ্জালের আগমনের কথা বিশ্বাস করেনা।
(২) তাদের নেতাদেরকে জিজ্ঞাস করা হয়েছিলো, তোমাদের ক্বুরআন হিফজ করার কোনো স্কুল নেই কেনো? উত্তরে তারা বলেছিলো, আমরা ছাত্রদেরকে দরবেশ বানাতে চাইনা।
(৩) তারা দ্বীন শেখা ও মানুষের মাঝে ইসলাম প্রচার থেকে রাজনীতিকেই বেশি প্রাধান্য দেয়।
তাদের এই কথাগুলো স্পষ্ট কুফুরীঃ
(১) দাজ্জালের আগমনকে অস্বীকার করা, (২) কবরের আজাবকে অস্বীকার করা (৩) আমরা ছাত্রদেরকে ক্বুরান মুখস্থ করাই না যাতে করে তারা দরবেশ না হয়, এমন ধৃষ্ঠতাপূর্ণ মন্তব্য করা।
হিযবুত তাহরীর-এর পথভ্রষ্টতা সম্পর্কে জানার জন্যে আপনারা আল-ইমাম, মুহাম্মাদ নাসির উদ্দিন আলবানী রাহিমাহুল্লাহর এই লেকচারটা দেখুন। লিঙ্ক –
“Shaykh Al-Albaanee’s Refutation of Hizb ut-Tahrir & Other Sects Who Deviate from the Salafi Manhaj”
https://www.youtube.com/watch?v=6c8undwTQE8

 

>>>কৃতজ্ঞতাঃ- তোমরা তোমাদের পালনকর্তার অভিমূখী হও এবং তাঁর আজ্ঞাবহ হও<<<