হজ্জ সম্পর্কিত ভুল-ত্রুটি ও বিদ‘আত সমূহ

হজ্জ সম্পর্কিত ভুল-ত্রুটি ও বিদ‘আত সমূহ

হজ্জ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। যা সামর্থ্যবান সকল মুসলমানের উপর ফরয। এটা এমন একটি ইবাদত যা মুমিনকে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছিয়ে দেয় এবং সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী মহাজাতিতে পরিণত হ’তে উদ্বুদ্ধ করে। আর যেকোন নেক আমল আল্লাহর নিকট কবুল হওয়ার অন্যতম শর্ত হ’ল আমলটি রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত অনুযায়ী সম্পন্ন হওয়া। অর্থাৎ বিদ‘আত মুক্ত হওয়া। দুঃখের বিষয় হ’ল বর্তমানে মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে হজ্জের উদ্দেশ্যে মক্কায় যায় এবং যাবতীয় কর্ম সম্পাদনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে এমন সব ভুল-ত্রুটি ও বিদ‘আতে লিপ্ত হয়, যা তার এই কঠোর পরিশ্রমে অর্জিত নেক আমলকে আল্লাহর নিকটে কবুল হ’তে বাধা সৃষ্টি করে। তাই বিদ‘আত মুক্ত হজ্জ সম্পাদনের লক্ষ্যে নিম্নে এ সম্পর্কিত বিদ‘আত সমূহ উল্লেখ করা হ’ল।

ইহরাম পূর্ব ভুল-ত্রুটি ও বিদ‘আত সমূহ

(১) হজ্জ যাত্রীর জন্য আযান দেওয়া : কোন কোন এলাকায় হজ্জের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় আযান দেওয়া হয়ে থাকে। যা সুস্পষ্ট বিদ‘আত। রাসূল (ছাঃ), ছাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেঈনে ইযামের কেউ কখনো হজ্জে যাওয়ার সময় আযান দেননি। এই আযানের পক্ষে একটি আয়াতকে দলীল হিসাবে পেশ করা হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَأَذِّنْ فِيْ النَّاسِ بِالْحَجِّ يَأْتُوْكَ رِجَالًا وَعَلَى كُلِّ ضَامِرٍ يَأْتِيْنَ مِنْ كُلِّ فَجٍّ عَمِيْقٍ- ‘আর মানুষের নিকট হজ্জের ঘোষণা করে দাও, তারা তোমার নিকটে আসবে পায়ে হেঁটে ও সর্বপ্রকার ক্ষীণকায় উটের পিঠে, এরা আসবে দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে’ (হজ্জ ২২/২৭)।

সম্মানিত পাঠক! উল্লিখিত আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা হজ্জ যাত্রার সময় আযান দেওয়ার নির্দেশ দেননি। বরং ইবরাহীম (আঃ) যখন পবিত্র কা‘বা গৃহ নির্মাণ করলেন তখন আল্লাহ তাঁকে নির্দেশ দিলেন যে, তুমি মানুষকে এই কা‘বা গৃহে হজ্জ করার আহবান জানাও। তখন তিনি আহবান করলেন।[1]

(২) হজ্জ যাত্রার প্রারম্ভে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করা : অনেকেই হজ্জে যাওয়ার সময় দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করে থাকেন। প্রথম রাক‘আতে সূরা ফাতিহার পরে সূরা কাফিরূন এবং দ্বিতীয় রাক‘আতে সূরা ইখলাছ পড়া হয়। ছালাত শেষে আয়াতুল কুরসী, সূরা ইখলাছ, সূরা নাস, সূরা ফালাক্ব সহ আরো এমন কিছু দো‘আ পড়া হয়, যা কুরআন ও ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত নয়। রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম হজ্জে গমনের সময় এ ধরনের ইবাদত করেননি। অতএব এটা ইসলামের মধ্যে অনুপ্রবিষ্ট নবাবিষ্কৃত কাজ; যা স্পষ্টতই বিদ‘আত।[2]

(৩) হজ্জের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় ইহকাল ও পরকালের প্রয়োজন পূরণের লক্ষ্যে সূরা আলে ইমরানের শেষ অংশ, আয়াতুল কুরসী এবং সূরা ফাতিহা তেলাওয়াত করা বিদ‘আত। কেননা এটা রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম থেকে প্রমাণিত নয়।[3]

(৪) হজ্জ সফরকারীর প্রত্যেক অবতরণ স্থলে সূরা ইখলাছ ১১ বার, আয়াতুল কুরসী একবার এবং একবার وَمَا قَدَرُوا اللهَ حَقَّ قَدْرِهِ তেলাওয়াত করা বিদ‘আত। কেননা এ ধরনের কোন আমল রাসূল (ছাঃ) থেকে প্রমাণিত নয়।[4]

(৫) হজ্জে গমনকারী বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় শ্লোগান দিতে দিতে তাকে গাড়িতে উঠিয়ে দেওয়া বিদ‘আত। বর্তমান সমাজে এর ব্যাপক প্রচলন লক্ষ্য করা যায়। প্রথমতঃ এর মাধ্যমে রিয়া তথা লৌকিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ভাবখানা এমন যেন সে হাজী খেতাব অর্জনের জন্যই হজ্জে যাচ্ছে। দ্বিতীয়তঃ এটা কুরআন ও ছহীহ হাদীছ পরিপন্থী; যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।

ইহরাম সম্পর্কিত ভুল-ত্রুটি ও বিদ‘আত সমূহ

(১) মীক্বাতে পৌঁছার পূর্বেই ইহরাম বাঁধা : ইহরাম দ্বারা উদ্দেশ্য হ’ল হজ্জ অথবা ওমরার নিয়ত করা। অর্থাৎ নির্ধারিত মীক্বাতে গিয়ে ইহরামের পোষাক পরিধান করতঃ হজ্জ বা ওমরার নিয়ত করবে। কেননা রাসূল (ছাঃ) ইহরাম বাঁধার জন্য মীক্বাত নির্ধারণ করেছেন[5] এবং সর্বদা মীক্বাতে গিয়েই ইহরামের পোষাক পরিধান করেছেন ও নিয়ত করেছেন।

(২) উচ্চৈঃস্বরে নিয়ত পড়া : রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘প্রত্যেকটি কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল’।[6] আর নিয়ত অর্থ- মনন করা বা সংকল্প করা। অতএব ছালাত, ছিয়াম, হজ্জ, যাকাত সহ প্রত্যেকটি ইবাদত সম্পাদনের জন্য অন্তরে সংকল্পের মাধ্যমেই নিয়ত করতে হবে। মুখে প্রকাশ করলে তা বিদ‘আতে পরিণত হবে। ছালাত আদায়ের জন্য যেমন অন্তরে সংকল্পের মাধ্যমে নিয়ত করে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে ছালাতে প্রবেশ করবে, হজ্জ সম্পাদনের জন্য তেমনি অন্তরে সংকল্পের মাধ্যমে হজ্জ অথবা ওমরার নিয়ত করে ‘লাববাইক আল্লাহুম্মা হাজ্জান’ অথবা ‘লাববাইক আল্লাহুম্মা ওমরাতান’ বলে হজ্জ অথবা ওমরায় প্রবেশ করবে। ছালাত আদায়ের জন্য যেমন ‘নাওয়াইতু আন উছল্লি…’ পড়া বিদ‘আত, হজ্জ সম্পাদনের জন্য তেমনি ‘নাওয়াইতু আন আহুজ্জা…’ পড়াও বিদ‘আত। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ), নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ), শায়খ বিন বায (রহঃ), মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন (রহঃ) সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম অনুরূপ মত প্রকাশ করেছেন।[7]

(৩) তাওয়াফ ব্যতীত অন্য সময় ইযতিবা‘ করা : ইযতিবা‘ অর্থাৎ ইহরাম অবস্থায় ডান কাঁধ খালি রেখে ডান বগলের নীচ দিয়ে ইহরামের পোষাক পরিধান করা। যা শুধুমাত্র পবিত্র কা‘বা গৃহ তাওয়াফের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।[8] তাওয়াফ ব্যতীত অন্য সময় ইযতিবা‘ করা সুন্নাত পরিপন্থী হওয়ায় তা বিদ‘আতের অন্তর্ভুক্ত। এমনকি বর্তমানে হাজী ছাহেবরা ‘ইযতিবা’ তথা ডান কাঁধ খোলা রাখা অবস্থাতেই ছালাত আদায় করে থাকেন। অথচ কাঁধ খোলা রাখা অবস্থায় ছালাত আদায় করলে ছালাত শুদ্ধ হবে না। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,لاَ يُصَلِّيَنَّ أَحَدُكُمْ فِيْ الثَّوْبِ الْوَاحِدِ لَيْسَ عَلَى عَاتِقِهِ مِنْهُ شَىْءٌ- ‘তোমাদের কেউ যেন এক কাপড়ে এমনভাবে ছালাত আদায় না করে, যাতে তার কাঁধে ঐ কাপড়ের কোন অংশ থাকে না’।[9] অন্য হাদীছে এসেছে, نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُصَلِّيَ الرَّجُلُ فِيْ سَرَاوِيْلَ وَلَيْسَ عَلَيْهِ رِدَاءٌ- ‘রাসূল (ছাঃ) চাদর ব্যতীত শুধুমাত্র পায়জামা পরিধান করে ছালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন’।[10]

(৪) দলবদ্ধভাবে তালবিয়া পাঠ করা : বর্তমানে দলবদ্ধভাবে হজ্জের তালবিয়া পাঠের প্রচলন অধিক হারে লক্ষ্য করা যায়। রাসূল (ছাঃ) এবং ছাহাবায়ে কেরামের যামানায় কেউ কখনো দলবদ্ধভাবে তালবিয়া পাঠ করেননি। সকলেই নিজ নিজ গতিতে তালবিয়া পাঠ করতেন।[11]

(৫) ‘তান‘ঈম’ নামক স্থান থেকে ইহরাম বেঁধে বার বার ওমরাহ পালন করা : অনেক হাজী ছাহেব মসজিদুল হারাম হ’তে ৬ কিঃমিঃ উত্তরে ‘মসজিদে আয়েশা’ বা তান‘ঈম মসজিদ থেকে, আবার কেউ ১৬ কিঃমিঃ পূর্বে জি‘ইর্রা-নাহ মসজিদ হ’তে ইহরাম বেঁধে বার বার ওমরাহ করে থাকেন। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কাজ। এ দুই মসজিদের পৃথক কোন গুরুত্ব নেই। এসব স্থান থেকে মক্কায় বসবাসকারীগণ ওমরাহর জন্য ইহরাম বেঁধে থাকেন, মক্কার বাইরের লোকেরা নন।

শায়খ আব্দুল আযীয বিন বায (রহঃ) বলেন, ‘কিছু সংখ্যক লোক হজ্জের পর অধিক সংখ্যক ওমরাহ করার আগ্রহে ‘তানঈম’ বা জি‘ইর্রানাহ নামক স্থানে গিয়ে ইহরাম বেঁধে আসেন। শরী‘আতে এর কোনই প্রমাণ নেই’।[12]

শায়খ ছালেহ আল-উছায়মীন (রহঃ) বলেন, এটি জায়েয নয়, বরং বিদ‘আত। কেননা এর পক্ষে একমাত্র দলীল হ’ল বিদায় হজ্জের সময় আয়েশা (রাঃ)-এর ওমরাহ। অথচ ঋতু এসে যাওয়ায় প্রথমে হজ্জে ক্বিরান-এর ওমরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় হজ্জের পরে তিনি এটা করেছিলেন। তাঁর সাথে ‘তানঈম’ গিয়েছিলেন তাঁর ভাই আব্দুর রহমান। কিন্তু সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি পুনরায় ওমরাহ করেননি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথী অন্য কোন ছাহাবীও এটা করেননি’।[13] শায়খ আলবানী (রহঃ) একে নাজায়েয বলেছেন এবং একে ‘ঋতুবতীর ওমরাহ’ (عمرة الحائض) বলে আখ্যায়িত করেছেন।[14] হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) একে নাজায়েয বলেছেন।[15]

তাওয়াফ সম্পর্কিত ভুল-ত্রুটি ও বিদ‘আত

(১) তাওয়াফের উদ্দেশ্যে গোসল করা : বিশেষ ফযীলতের আশায় গোসল করে তাওয়াফ আরম্ভ করা বিদ‘আত।[16] কেননা রাসূল (ছাঃ) পবিত্র কা‘বা গৃহ তাওয়াফের উদ্দেশ্যে কখনোই গোসল করেননি। বরং তিনি সর্বদা ওযূ করে তাওয়াফ করতেন। আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত যে,

أَنَّ أَوَّلَ شَيْءٍ بَدَأَ بِهِ حِيْنَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ تَوَضَّأَ، ثُمَّ طَافَ، ثُمَّ لَمْ تَكُنْ عُمْرَةً، ثُمَّ حَجَّ أَبُوْ بَكْرٍ، وَعُمَرُ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا مِثْلَهُ-

‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মক্কায় উপনীত হয়ে সর্বপ্রথম ওযূ করে তাওয়াফ সম্পন্ন করেন। (রাবী বলেন), রাসূল (ছাঃ)-এর এই তাওয়াফটি ওমরার তাওয়াফ ছিল না। অতঃপর আবূ বকর ও ওমর (রাঃ) অনুরূপভাবে হজ্জ করেছেন।[17]

(২) তাওয়াফের উদ্দেশ্যে হারাম শরীফে প্রবেশের পরে তাহিয়াতুল মসজিদ আদায় করা : রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম তাওয়াফের উদ্দেশ্যে হারাম শরীফে প্রবেশ করলে তাহিয়্যাতুল মসজিদের দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করতেন না। কেননা তাওয়াফের মাধ্যমেই তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায় হয়ে যায়। তবে তাওয়াফের উদ্দেশ্য না থাকলে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় না করে বসবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلاَ يَجْلِسْ حَتَّى يُصَلِّىَ رَكْعَتَيْنِ ‘তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করবে, তখন সে যেন দুই রাক‘আত ছালাত আদায় না করা পর্যন্ত না বসে’।[18]

(৩) হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করার সময় রাফ‘উল ইয়াদায়েন করা : অনেকেই হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করার সময় ছালাতের রাফ‘উল ইয়াদায়েনের ন্যায় দুই হাত উত্তোলন করে থাকেন। অথচ রাসূল (ছাঃ) কখনোই তা করেননি। তাই তা থেকে বিরত থাকা আমাদের একান্ত কর্তব্য।[19]

(৪) রুকনে ইয়ামানীতে চুম্বন করা : অনেকে অধিক ফযীলতের আশায় রুকনুল ইয়ামানীতে চুম্বন করে থাকে। অথচ রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম কখনো রুকনে ইয়ামানীতে চুম্বন করেননি। বরং তাঁরা শুধুমাত্র হাত দ্বারা স্পর্শ করেছেন। হাদীছে এসেছে,

عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رضى الله عنهما قَالَ لَمْ أَرَ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم يَسْتَلِمُ مِنَ الْبَيْتِ إِلاَّ الرُّكْنَيْنِ الْيَمَانِيَيْنِ-

সালেম ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে দু’টি রুকনে ইয়ামানী (হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানী) ব্যতীত অন্য কোথাও স্পর্শ করতে দেখিনি।[20]

অতএব সম্ভব হ’লে রুকনে ইয়ামানী স্পর্শ করতে হবে। স্পর্শ করতে সক্ষম না হ’লে কিছুই করতে হবে না। অনেকেই রুকনে ইয়ামানী স্পর্শ করতে না পারলে হাত দ্বারা ইশারা করে থাকেন; যা সুন্নাত পরিপন্থী।

(৫) কা‘বা গৃহের দেয়াল ধরে কান্নাকাটি করা : অনেকে অধিক নেকী ও দো‘আ কবুলের আশায় কা‘বার গিলাফ, দেয়াল, দরজা প্রভৃতি স্থানে মুখ-বুক লাগিয়ে উচ্চৈঃস্বরে কান্নাকাটি করেন। এমনকি অনেকেই সুযোগ পেলে কা‘বার গিলাফ চুরি করে কেটে নিয়ে আসে। যার কারণে সঊদী সরকার বাধ্য হয়ে হজ্জের সময় কা‘বার গিলাফকে উপরে উঠিয়ে রাখেন। অথচ রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম তাওয়াফের সময় পূর্ব রুকনে ইয়ামানী (হাজরে আসওয়াদ) ও পশ্চিম রুকনে ইয়ামানী ব্যতীত কা‘বা গৃহের অন্য কোন অংশ স্পর্শ করতেন না।[21] ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত,

أَنَّهُ طَافَ مَعَ مُعَاوِيَةَ بِالْبَيْتِ فَجَعَلَ مُعَاوِيَةُ يَسْتَلِمُ الأَرْكَانَ كُلَّهَا فَقَالَ لَهُ ابْنُ عَبَّاس ٍ لِمَ تَسْتَلِمُ هَذَيْنِ الرُّكْنَيْنِ وَلَمْ يَكُنْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَسْتَلِمُهُمَا فَقَالَ مُعَاوِيَةُ لَيْسَ شَىْءٌ مِنَ الْبَيْتِ مَهْجُوْراً. فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ) فَقَالَ مُعَاوِيَةُ صَدَقْتَ-

তিনি মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর সাথে তাওয়াফ করছিলেন। মু‘আবিয়া (রাঃ) কা‘বা গৃহের সকল রুকনেই স্পর্শ করলেন। তখন ইবনু আববাস (রাঃ) তাঁকে বললেন, আপনি এই দু’টি রুকন স্পর্শ করলেন কেন? অথচ রাসূল (ছাঃ) এই দু’টি স্পর্শ করেননি। তখন মু‘আবিয়া (রাঃ) বললেন, বায়তুল্লাহর কোন অংশই বাদ দেওয়া যেতে পারে না। তখন ইবনু আববাস (রাঃ) বললেন,لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ ‘তোমাদের জন্য তোমাদের রাসূল (ছাঃ)-এর মধ্যেই রয়েছে উত্তম আদর্শ’। তখন মু‘আবিয়া (রাঃ) বললেন, সত্য বলেছেন।[22] অতএব এটা বিদ‘আত; যা অবশ্য বর্জনীয়।

(৬) তাওয়াফের মধ্যে দলব্ধভাবে দো‘আ করা : রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, الدُّعَاءُ هُوَ الْعِبَادَةُ ‘দো‘আ হ’ল ইবাদত’।[23] আর ইবাদত কবুলের অন্যতম শর্ত হ’ল, রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত অনুযায়ী হওয়া। তিনি যে পদ্ধতিতে দো‘আ করেছেন ঠিক সে পদ্ধতিতেই দো‘আ করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের কেউ কখনো তাওয়াফ ও সাঈতে দলবদ্ধভাবে উচ্চৈঃস্বরে দো‘আ করেছেন মর্মে কোন দলীল পাওয়া যায় না। অতএব এহেন বিদ‘আতী পদ্ধতি পরিত্যাগ করে সুন্নাতী পদ্ধতিতে দো‘আ করা অপরিহার্য। আর তা হ’ল, নিম্নস্বরে বিনম্রচিত্তে একাকী দো‘আ করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ادْعُوْا رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةً إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِيْنَ ‘তোমরা বিনীতভাবে ও গোপনে তোমাদের প্রতিপালককে ডাক। তিনি যালিমদেরকে পসন্দ করেন না’ (আ‘রাফ ৭/৫৫)। তিনি অন্যত্র বলেন, وَاذْكُرْ رَبَّكَ فِيْ نَفْسِكَ تَضَرُّعًا وَخِيْفَةً وَدُوْنَ الْجَهْرِ مِنَ الْقَوْلِ بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ وَلَا تَكُنْ مِنَ الْغَافِلِيْنَ- ‘তোমার প্রতিপালককে মনে মনে বিনম্রচিত্তে ও গোপনে অনুচ্চৈঃস্বরে প্রত্যুষে ও সন্ধ্যায় স্মরণ করবে এবং তুমি উদাসীনদের অন্তর্ভুক্ত হবে না’ (আ‘রাফ ৭/২০৫)।

(৭) হাতীমের মধ্যে দিয়ে তাওয়াফ করা : কা‘বার উত্তর পার্শ্বে স্বল্প উচ্চ দেওয়াল ঘেরা ‘হাত্বীম’-এর বাহির দিয়ে ত্বাওয়াফ করতে হবে। ভিতর দিয়ে গেলে ঐ ত্বাওয়াফ বাতিল হবে ও পুনরায় আরেকটি ত্বাওয়াফ করতে হবে। কেননা ‘হাত্বীম’ (الحطيم) হ’ল কা‘বা গৃহের মূল ভিতের উত্তর দিকের পরিত্যক্ত অংশের নাম। যা একটি স্বল্প উচ্চ অর্ধ গোলাকার প্রাচীর দ্বারা চিহ্নিত করা আছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নবুঅত লাভের পাঁচ বছর পূর্বে তাঁর ৩৫ বছর বয়স কালে কুরায়েশ নেতাগণ বন্যার তোড়ে ধ্বসে পড়ার উপক্রম হ’লে বহু বছরের প্রাচীন ইবরাহীমী কা‘বাকে ভেঙ্গে নতুনভাবে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। তারা তাদের পবিত্র উপার্জন দ্বারা এক এক গোত্র এক এক অংশ নির্মাণের দায়িত্ব ভাগ করে নেন। কিন্তু উত্তরাংশের দায়িত্বপ্রাপ্ত বনু ‘আদী বিন কা‘ব বিন লুওয়াই তাদের হালাল অর্থের ঘাটতি থাকায় ব্যর্থ হয়। ফলে ঐ অংশের প্রায় ৬ হাত জায়গা বাদ রেখেই দেওয়াল নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়। এতে ইবরাহীমী কা‘বার ঐ অংশটুকু বাদ পড়ে যায়। যা ‘হাত্বীম’ বা পরিত্যক্ত নামে আজও ঐভাবে আছে। অতএব উক্ত অংশটি মূল কা‘বার অন্তর্ভুক্ত। আর তাওয়াফ করতে হবে কা‘বা গৃহের বাহির দিয়ে; ভেতর দিয়ে নয়।

(৮) প্রত্যেক তাওয়াফের জন্য পৃথক পৃথক দো‘আ নির্দিষ্ট করা : বর্তমানে হজ্জ বিষয়ক কিছু বইয়ে প্রত্যেক তাওয়াফের জন্য পৃথক পৃথক দো‘আ লিপিব্ধ করা হয়েছে; যা কুরআন ও সুন্নাত পরিপন্থী। রাসূল (ছাঃ) পবিত্র কা‘বা গৃহ তাওয়াফের সময় শুধুমাত্র রুকনে ইয়ামানী থেকে হাজরে আসওয়াদে পৌঁছা পর্যন্ত رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ দো‘আটি পড়তেন।[24] উল্লিখিত দো‘আ ব্যতীত অন্য কোন দো‘আ তাওয়াফের জন্য নির্দিষ্ট নয়। সকলেই তার মনের ইচ্ছা অনুযায়ী যেকোন দো‘আ করতে পারে। কুরআন ও ছহীহ হাদীছে বর্ণিত দো‘আ মুখস্থ না থাকলে নিজের মাতৃভাষায় দো‘আ করা যায়।[25]

(৯) বিদায়ী ত্বাওয়াফ শেষ করে ফেরার সময় কা‘বা গৃহের দিকে মুখ করে পিছন দিকে হেঁটে আসা : অনেকে বাড়ী ফিরার পূর্ব মুহূর্তে বিদায়ী তাওয়াফ শেষে কা‘বা গৃহের অসম্মান হবে মনে করে পিছন দিকে হেঁটে বের হয়ে আসেন। অথচ রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম কখনো এভাবে বের হননি। এটা কবরপূজারী ছূফীদের বিদ‘আতী তরীকা, যা অবশ্যই বর্জনীয়।

সা‘ঈ সম্পর্কিত ভুল-ক্রটি ও বিদ‘আত সমূহ

(১) অধিক ছওয়াবের আশায় সা‘ঈর উদ্দেশ্যে ওযূ করা : অনেকে অধিক ছওয়াব লাভের আশায় ছাফা-মারওয়া সা‘ঈর উদ্দেশ্যে ওযূ করে। তারা ধারণা করে ওযূ করে ছাফা-মারওয়া সা‘ঈ করলে তার জন্য সত্তর হাযার নেকী লিখা হবে। অথচ এর প্রমাণে ছহীহ কোন দলীল নেই। অতএব এ উদ্দেশ্যে ওযূ করলে তা বিদ‘আতে পরিণত হবে।[26]

(২) কুরআন ও ছহীহ হাদীছে বর্ণিত সা‘ঈর নির্দিষ্ট দো‘আর সাথে অন্য দো‘আ নির্দিষ্ট করা : বর্তমানে প্রকাশিত অধিকাংশ বইয়ে দেখা যায়, ছাফা-মারওয়া সা‘ঈ করার সময় নির্দিষ্টভাবে যে দো‘আ কুরআন ও ছহীহ হাদীছে বর্ণিত হয়েছে, তার সাথে আরো কিছু দো‘আকে সংযুক্ত করা হয়েছে। অথচ এর অধিকাংশই কুরআন ও ছহীহ হাদীছে বর্ণিত হয়নি। আবার কিছু বর্ণিত হ’লেও সেগুলোকে সা‘ঈর জন্য খাছ করা হয়নি। সা‘ঈর ক্ষেত্রে ইসলামী শরী‘আত কর্তৃক নির্দিষ্ট দো‘আ হ’ল ত্বাওয়াফ শেষে ছাফা পাহাড়ের নিকটবর্তী হয়ে নিম্নোক্ত আয়াতটি পাঠ করা-

إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا وَمَنْ تَطَوَّعَ خَيْرًا فَإِنَّ اللهَ شَاكِرٌ عَلِيْمٌ

‘নিশ্চয়ই ছাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শন সমূহের অন্যতম। অতএব যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহর হজ্জ অথবা ওমরা করবে, তার জন্য এদু’টি পাহাড় প্রদক্ষিণ করায় দোষ নেই। সুতরাং যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সৎকর্ম করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তার যথার্থ মূল্যায়নকারী ও তার সম্পর্কে সম্যক অবগত’ (বাক্বারাহ ২/১৫৮)।

অতঃপর ছাফা পাহাড়ে উঠে কা‘বার দিকে মুখ করে দু’হাত উঠিয়ে তিনবার নিম্নের দো‘আটি পাঠ করবেন ও অন্যান্য দো‘আ করবেন।-

لآ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَشَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِِىْ وَيُمِيْتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٌ- لآ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَشَرِيْكَ لَهُ، أَنْجَزَ وَعْدَهُ وَنَصَرَ عَبْدَهُ وَهَزَمَ الْأَحْزَابَ وَحْدَهُ-

অর্থ : ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি এক। তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁরই জন্য সকল রাজত্ব ও তাঁরই জন্য সকল প্রশংসা। তিনিই বাঁচান ও তিনিই মারেন এবং তিনি সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী। আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি এক। তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি তাঁর ওয়াদা পূর্ণ করেছেন ও স্বীয় বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং একাই শত্রু দলকে ধ্বংস করেছেন’।[27]

এটা ব্যতীত অন্য কোন দো‘আ ছাফা-মারওয়া সা‘ঈর জন্য নির্দিষ্ট নয়। অতএব ইসলামী শরী‘আত যা নির্দিষ্ট করেনি ইবাদতের জন্য তা নির্দিষ্ট করলে বিদ‘আতে পরিণত হবে। সুতরাং যার যা দো‘আ মুখস্থ আছে, তাই নীরবে পড়বেন। অবশ্যই তা ছহীহ হাদীছে বর্ণিত দো‘আ হওয়া বাঞ্ছনীয়। তবে ছহীহ হাদীছে বর্ণিত দো‘আ মুখস্থ না থাকলে নিজের মাতৃভাষায় দো‘আ করতে পারেন।

(৩) মহিলাদের ছাফা-মারওয়ার মাঝখানে সবুজ লাইট চিহ্নিত স্থানে দ্রুত চলা : মহিলাদের অনেককেই দেখা যায় ছাফা-মারওয়ার মাঝখানে সবুজ লাইট দ্বারা চিহ্নিত স্থানে দ্রুত চলেন বা দৌড়ান। অথচ এটা শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য খাছ, নারীদের জন্য নয়। ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, لَيْسَ عَلَى النِّسَاءِ رَمَلٌ بِالْبَيْتِ وَلاَ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ ‘নারীদের জন্য তাওয়াফ ও ছাফা-মারওয়ার মাঝখানে রমল তথা দ্রুত চলতে হবে না’।[28]

উপসংহার :

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ হজ্জ ছহীহ হাদীছ মোতাবেক হওয়া অতীব যরূরী। কেননা বিদ‘আত মিশ্রিত কোন আমল আল্লাহর নিকটে কবুল হয় না। অতএব হজ্জ সহ যাবতীয় ইবাদত বিদ‘আত মুক্তভাবে আদায় করা একান্ত কর্তব্য। আল্লাহ আমাদেরকে তাওফীক দান করুন-আমীন!
– মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম

[1]. তাফসীর ইবনে কাছীর, উল্লিখিত আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।

[2]. নাছিরুদ্দীন আলবানী, মানাসিকুল হজ্জ, ১/৪৭; মুহাম্মাদ মুনতাছির রাইসূনী, কুল্লু বিদ‘আতিন যালালা, পৃঃ ২০১; আশরাফ ইব্রাহীম ক্বাতক্বাত, আল-বুরহানুল মুবীন, ১/৫৫৫।

[3]. তদেব।

[4]. তদেব।

[5]. বুখারী হা/১৫২৪; মুসলিম হা/১১৮১; মিশকাত হা/২৫১৬।

[6]. বুখারী হা/১; মুসলিম হা/১৯০৭; মিশকাত হা/১।

[7]. মাজমূ‘ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া ২২/২২২; ফাতাওয়া ইসলামিয়া ২/৪৬৬।

[8]. মুসনাদে আহমাদ হা/৩৫১২; আবুদাউদ হা/১৮৮৪; মিশকাত হা/২৫৮৫।

[9]. বুখারী হা/৩৫৯; মুসলিম হা/৫১৬; মিশকাত হা/৭৫৫।

[10]. মুস্তাদরাক হাকেম হা/৯১৪; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৮৩০।

[11]. মানাসিকুল হজ্জ ১/৪৭; কুল্লু বিদ‘আতিন যালালা, পৃঃ ২০১; আল-বুরহানুল মুবীন ১/৫৫৫।

[12]. দলীলুল হাজ্জ ওয়াল মু‘তামির, অনু: আব্দুল মতীন সালাফী, ‘সংক্ষিপ্ত নির্দেশাবলী’ অনুচ্ছেদ, মাসআলা-২৪, পৃঃ ৬৫।

[13]. মাজমূ‘ ফাতাওয়া, প্রশ্নোত্তর সংখ্যা ১৫৯৩; ঐ, ‘লিক্বা-উল বাব আল-মাফতূহ’ অনুচ্ছেদ ১২১, মাসআলা-২৮।

[14]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৯৮৪-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য।

[15]. যাদুল মা‘আদ ২/৮৯।

[16]. মানাসিকুল হজ্জ ১/৪৭; কুল্লু বিদ‘আতিন যালালা পৃঃ ২০১; আল-বুরহানুল মুবীন ১/৫৫৫।

[17]. বুখারী হা/১৬১৪-১৬১৫; মুসলিম হা/১২৩৫; মিশকাত হা/২৫৬৩।

[18]. বুখারী হা/১১৬৩; মুসলিম হা/৭১৪; মিশকাত হা/৭০৪; মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন, মাজমু‘ ফাতাওয়া, প্রশ্নোত্তর নং ৮৫৪।

[19]. মানাসিকুল হজ্জ, পৃঃ ১/৪৭; কুল্লু বিদ‘আতিন যালালা, পৃঃ ২০১; আল-বুরহানুল মুবীন, ১/৫৫৫।

[20]. বুখারী হা/১৬০৯; মুসলিম হা/১২৬৭; মিশকাত হা/২৫৬৮।

[21]. বুখারী হা/১৬০৯; মুসলিম হা/১২৬৭; মিশকাত হা/২৫৬৮।

[22]. বুখারী হা/১৬০৮; মুসনাদে আহমাদ হা/১৮৭৭।

[23]. আবুদাউদ হা/১৪৭৯; তিরমিযী হা/২৯৬৯; ইবনু মাজাহ হা/৩৮২৮; মিশকাত হা/২২৩০; সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামে‘ হা/৩৪০৭।

[24]. বাক্বারাহ ২/২০১; ছহীহ আবুদাঊদ হা/১৬৬৬; মিশকাত হা/২৫৮১; বুখারী হা/৪৫২২, ৬৩৮৯; মিশকাত হা/২৪৮৭।

[25]. মানাসিকুল হজ্জ, পৃঃ ১/৪৭; কুল্লু বিদ‘আতিন যালালাহ, পৃঃ ২০১; আল-বুরহানুল মুবীন, ১/৫৫৫।

[26]. তদেব।

[27]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৫৫৫; আবুদাঊদ হা/১৮৭২।

[28]. দারাকুত্বনী হা/২৭৯৯; মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/১৩১১০।