স্বলাতের সময় টুপি না পরা

স্বলাতের সময় টুপি না পরা

স্বলাতের সময় টুপি না পরা
জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর স্বলাত- এর অংশবিশেষ
শায়খ মুযাফফর বিন মুহসিন

অনেক মুছল্লীকে দেখা যায় গোঁড়ামী করে টুপি পরে না। এমনকি উন্মুক্ত মাথায় স্বলাত আদায় করে। এটা নিঃন্দেহে সৌন্দর্যের খেলাপ। রাসূল (ﷺ) টুপি পরেছেন মর্মে কোন সহিহ হাদীছ পাওয়া যায় না। কারণ তিনি পাগড়ী পরতেন। ওযূ করার সময় রাসূল (ﷺ) পাগড়ীর উপর মাসাহ করেছেন এবং তাতে স্বলাত আদায় করেছেন বলে প্রমাণিত হয়।[1] তিনি খালি মাথায় স্বলাত আদায় করেছেন মর্মে কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। হাসান বাছরী (রহঃ) বলেন, ছাহাবীগণ প্রচন্ড গরমে পাগড়ী ও টুপির উপর সিজদা করতেন।[2] এতে বুঝা যায় যে তারা স্বলাতে টুপি বা পাগড়ী পরে স্বলাত আদায় করতেন। খালি মাথায় স্বলাত আদায়কে অপসন্দ করতেন। যেমন- স্বলাতের সময় টুপি না পরা

عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا رَأَى مَوْلاَهُ نَافِعاً يُصَلِّىْ حَاسِرَ الرَّأْسِ فَقَالَ لَهُ أَرَأَيْتَ لَوْ أَنَّكَ ذَهَبْتَ لِمُقَابَلَةِ أَحَدِ هَؤُلاَءِ الْأُمَرَاءِ أَكُنْتَ تُقَابِلُهُ وَأَنْتَ حَاسِرُ الرَّأْسِ؟ قَالَ لاَ قَالَ فَاللهُ أَحَقُّ أَنْ يَّتَزَيَّنَ لَهُ.

ইবনু ওমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, একাদা তিনি তার গোলাম নাফে‘ (রাঃ)-কে খালি মাথায় স্বলাত আদায় করতে দেখলেন। অতঃপর তাকে বললেন, তুমি যদি কোন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ করতে যাও তাহলে কি তুমি খালি মাথায় তার সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবে? তিনি বললেন, না। তখন ইবনু ওমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহ অধিক হক্বদার- তাঁর জন্য সৌন্দর্য বর্ধন করা’।[3] খালি মাথায় স্বলাত আদায় করা একদিকে অপসন্দনীয় কাজ, অন্যদিকে খালি মাথায় থাকা খৃস্টানদের নিদর্শন।[4]

তাছাড়া স্বলাত হোক বা স্বলাতের বাইরে হোক মাথা ঢেকে রাখা মুসলিমদের জন্য সৌন্দর্যের প্রতীক।[5] টুপি, পাগড়ী, রুমাল যা দিয়েই হোক। আর স্বলাতের মধ্যে মাথা ঢাকা সৌন্দর্যের অন্যতম। আল্লাহ বলেন, خُذُوْا زِيْنَتَكُمْ عِنْدَ كُلِّ مَسْجِدٍ ‘তোমরা স্বলাতের সময় সুন্দর পোষাক পরিধান কর’ (আ‘রাফ ৩১)।[6] রাসূল (ﷺ) কখনো মাথায় বড় রুমালও ব্যবহার করেছেন।[7] অবশ্য ছাহাবায়ে কেরাম অনেক সময় জুতা, মোজা, টুপি, জামা ছাড়াও চলেছেন।[8]

[1]. সহিহ মুসলিম হা/৬৫৬, ১ম খন্ড, পৃঃ ১৩৪; মিশকাত হা/৫১৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৮৩, ২/১৩০ পৃঃ- قَالَ أَمَعَكَ مَاءٌ فَأَتَيْتُهُ بِمَطْهَرَةٍ فَغَسَلَ كَفَّيْهِ وَوَجْهَهُ ثُمَّ ذَهَبَ يَحْسِرُ عَنْ ذِرَاعَيْهِ فَضَاقَ كُمُّ الْجُبَّةِ فَأَخْرَجَ يَدَهُ مِنْ تَحْتِ الْجُبَّةِ وَأَلْقَى الْجُبَّةَ عَلَى مَنْكِبَيْهِ وَغَسَلَ ذِرَاعَيْهِ وَمَسَحَ بِنَاصِيَتِهِ وَعَلَى الْعِمَامَةِ وَعَلَى خُفَّيْهِ ثُمَّ رَكِبَ وَرَكِبْتُ فَانْتَهَيْنَا إِلَى الْقَوْمِ وَقَدْ قَامُوا فِى الصَّلاَةِ يُصَلِّى بِهِمْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ وَقَدْ رَكَعَ بِهِمْ رَكْعَةً فَلَمَّا أَحَسَّ بِالنَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم ذَهَبَ يَتَأَخَّرُ فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ فَصَلَّى بِهِمْ فَلَمَّا سَلَّمَ قَامَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم وَقُمْتُ فَرَكَعْنَا الرَّكْعَةَ الَّتِى سَبَقَتْنَا.
[2]. বুখারী হা/৩৮৫, ১/৫৬ পৃঃ, ‘স্বলাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২৩-এর আলোচনা, (ইফাবা হা/৩৭৮-এর পূর্বের অনুচ্ছেদ, ১/২১৯ পৃঃ); এবং হা/১১৯৮, ১/১৫৯ পৃঃ, (ইফাবা হা/১১২৪-এর পূর্বের অনুচ্ছেদ, ২/৩৩০ পৃৃৃঃ), ‘স্বলাতের মধ্যে বিভিন্ন কাজ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১-এর আলোচনা দ্রঃ।
[3]. ইবনু তায়মিয়াহ, হিজাবুল মারআহ ওয়া লিবাসুহা ফিছ ছালাহ, পৃঃ ৩; দুরূসুন লিশ শায়খিল আলবানী, পৃঃ ২৫; তামামুল মিন্নাহ, পৃঃ ১৬৪।
[4]. আলবানী, ছিফাতু স্বলাতিন নাবী, পৃঃ ১/১৬৬ পৃঃ- كل ذلك يقتضي كراهة الصلاة حاسر الرأس لأن ذلك من التشبّه بالنصارى حينما يقومون في عبادتهم حاسرين كما هو مشهور عنهم।
[5]. সিলসিলা যঈফাহ হা/২৫৩৮-এর শেষ আলোচনা দ্রঃ-فإن ستر الرأس من الزينة عند المسلمين।
[6]. সিলসিলা সহিহাহ হা/১৩৬৯।
[7]. বুখারী হা/৫৮০৭, ২/৮৬৪ পৃঃ, ‘পোষাক’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৬, (ইফাবা হা/৫৩৯১, ৯/৩২২ পৃঃ)।
[8]. মুসলিম হা/২১৭৭, ১/৩০১ পৃঃ, ‘জানাযা’ অধ্যায়, ‘রোগীর সেবা’ অনুচ্ছেদ-৭, (ইফাবা হা/২০০৭)। স্ব