সিদরাতুল মুনতাহা এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়

– সিদরা (سِدْرَةٌ) আরবী শব্দ, অর্থ কুলগাছ।
– আল মুনতাহা (لمُنْتَهَى) অর্থ প্রান্তসীমা বা শেষ সীমা। সুতরাং ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ অর্থ প্রান্তস্থিত কুলবৃক্ষ। যা অতীব সুন্দর ও সুসজ্জিত। ফেরেশতাদের গমনাগমনের এটাই শেষ সীমা। এর উপরে আল্লাহর আরশ অবস্থিত। আল্লাহর বিধানাবলী আরশ থেকে প্রথমে এখানে নাযিল করা হয়।
অতঃপর সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট ফেরেশতাগণের মাধ্যমে দুনিয়াতে প্রেরিত হয়। অনুরূপভাবে বান্দাদের আমলনামা সমূহ প্রথমে এখানে নিয়ে আসা হয়। অতঃপর এখান থেকে আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। ফেরেশতা বা নবী-রাসূল কেউই এই স্থান অতিক্রম করতে পারেননি, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যতীত।
কুরআনে এ শব্দটি উল্লেখিত হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَىٰ -عِندَ سِدْرَةِ الْمُنتَهَىٰ – عِندَهَا جَنَّةُ الْمَأْوَىٰ
“নিশ্চয় সে তাকে আরেকবার দেখেছিল, সিদরাতুলমুন্তাহার নিকটে, যার কাছে অবস্থিত জান্নাতুল মা’ওয়া বসবাসের জান্নাত। (অর্থাৎ মিরাজের রাতে নবী সা. জিবরাঈলকে সেখানে প্রকৃত রূপে আরেকবার দেখেছিল) (সূরা নাজম: ১৩, ১৪ ও ১৫)”
হাদীসে এসেছে:
মিরাজের রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম ফিরে এসে সিদরাতুল মুনতাহা সম্পর্কে বলেছিলেন, “আমি সিদরাতুল মুনতাহা দেখলাম। এর ফল (বড়ই) যেন ‘হাজার’ নামক স্থানের (বড়) মটকার ন্যায়। আর তার পাতা যেন হাতীর কানের মতো বড়। সিদরাতুল মুনতাহার মূল থেকে চারটি ঝরনা প্রবাহিত হয়েছে। দুইটি ঝরণা ভেতরে, আর দুইটি ঝরণা বাইরে। এই (চারটি ঝরণা) সম্পর্কে আমি জিবরাঈলকে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, ভেতরের দুইটি ঝরণা জান্নাতে অবস্থিত। আর বাইরের ঝরণা দুইটির একটি হল (ইরাকের) ফুরাত, আর অপরটি হল (মিশরের) নীল নদ। (হিলিয়াতুল আওলিয়া, ৩/৭২ এর সমার্থ বোধক হাদীসকে জামে সাহীহ গ্রন্থে ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন)
এ বিষয়ে আরও অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহু আলাম।
========
*আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল*
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।