সায়িম ব্যাক্তিকে ইফতার করানোর ফযিলত‎

সায়িম ব্যাক্তিকে ইফতার করানোর ফযিলত‎
===================================
জায়েদ ইব্‌ন খালেদ জুহানি (رضى الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,
«مَن فَطَّرَ صَائماً كَانَ له مِثْلُ أَجْرِهِ غَيْرَ أَنَّهُ لا يَنقُصُ مِن أَجْرِ الصَّائِمِ شَيئاً»
-যে রোযাদারকে ইফতার করাল, তার রোযাদারের ন্যায় সাওয়াব হবে, তবে রোযাদারের নেকি ‎বিন্দুমাত্র কমানো হবে না। [তিরমিযি হা/৮০৭; ইব্‌ন মাজাহ হা/১৭৪৬; নাসায়ি ফিল কুবরা হ/৩৩৩০-৩৩৩১; সহিহ ইব্‌ন খুযাইমাহ হা/২০৬৪; ইব্‌ন হিব্বান হা/৩৪২৯]
অপর বর্ণনায় আছেঃ
«مَنْ فَطَّر صَائماً أَطعَمَهُ وسَقَاهُ كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنقُصَ مِنْ أَجْرِهِ شَيء».
-যে রোযাদারকে ইফতার করাল, তাকে পানাহার করাল, তার রোযাদারের সমান সওয়াব হবে, তবে তার নেকি থেকে বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না। [আব্দুর রায্‌যাক হা/৭৯০৫; তাবরানি ফিল কাবির (৫/২৫৬), হা/৫২৬৯ ]
.
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তাকে এক মহিলা ইফতারের জন্য দাওয়াত করল, তিনি তাতে সাড়া দিলেন এবং বললেন: “আমি তোমাকে বলছি, যে গৃহবাসী কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে, তাদের জন্য তার ‎অনুরূপ সওয়াব হবে। মহিলা বলল: আমি চাই আপনি ইফতারের জন্য আমার কাছে কিছুক্ষণ অবস্থান করুন বা এ জাতীয় কিছু বলেছে। তিনি বললেন: আমি চাই এ নেকি আমার পরিবার ‎হাসিল করুক।‎ [মুসান্নাফ ইব্‌ন আব্দুর রায্‌যাক ৭৯০৮]
.
■শিক্ষা ও মাসায়েলঃ
=================
❏ আল্লাহ তা‘আলার অসীম অনুগ্রহ যে, তিনি কল্যাণের নানা ক্ষেত্র উন্মুক্ত করেছেন। যেমন তিনি মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করার আহ্বান জানিয়ে মহান সওয়াবের ঘোষণা দিয়েছেন।[আরেযাতুল আহওয়াযি ৪/২১]
.
❏ রোযাদারকে ইফতার করানো একটি ফযিলতপূর্ণ আমল, যে রোযাদারকে ইফতার ‎করাবে সে তার ন্যায় নেকি লাভ করবে।
.
❏ রোযাদারকে ইফতার করালে তার বদলা আল্লাহ নিজের পক্ষ থেকে প্রদান করেন, রোযাদারের পক্ষ থেকে নয়। অতএব রোযাদারের সামান্য নেকি হ্রাস হবে না, এটা আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহের আলামত। [ফায়যুল কাদির ৬/১৮৭]
.
❏ এ থেকে বুঝা যায় ইফতারের দাওয়াত গ্রহণ করা বৈধ, বুজুর্গি দেখিয়ে বা ‎‎নেকি কমার আশঙ্কায় তা প্রত্যাখ্যান করা বাড়াবাড়ি। কারণ অপরের নিকট ‎ইফতার করলে রোযাদারের পুণ্য কমে না। তবে শুধু মিসকিনদের জন্য ইফতারের দাওয়াত হলে, সেখানে ধনীদের যাওয়া ঠিক নয়।
.
❏ আত্মীয়দের সঙ্গে সদাচার ও তাদের খুশির জন্য দাওয়াতে সাড়া দেয়া ও ইফতার করা বৈধ, যেন তাদের পুণ্য হাসিল হয়, যেমন আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু করেছেন।
.
❏ যে ইফতার করাবে, সে নেকি ও অপরের প্রতি ইহসানের নিয়ত করবে, বিশেষ করে রোযাদার যদি গরিব হয়।
.
❏ রোযাদারকে বাসায় নিয়ে আপ্যায়ন করা বা খাবার প্রস্তুত করে তার জন্য পাঠিয়ে দেয়া ইফতার করানোর শামিল, তবে অপচয় না করা, বিশেষ করে রকমারি ইফতারের এ যুগে।
.
❏ কেউ যদি গরিবকে টাকা দেয়, যার কিছু দিয়ে সে ইফতার করল, বাকিটা সংগ্রহে রেখে দিল, বাহ্যত তা ইফতার করানোর হাদিসের অন্তর্ভুক্ত হবে, অধিকন্তু সে আর্থিকভাবে উপকৃত হল।