সাধারণ মানুষের জন্য জুমুআ’হর সালাহর সংক্ষিপ্ত পদ্ধতি [রাসূল(সাঃ) অনুযায়ী]

সাধারণ মানুষের জন্য জুমুআ’হর সালাহর সংক্ষিপ্ত পদ্ধতি [রাসূল(সাঃ) অনুযায়ী]
জুমুআ’হর দিনে মসজিদে প্রবেশ করে প্রথমেই তাহিয়্যাতুল মসজিদ এর দুই রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। এমনকি জুমুআ’হর দিনে ইমাম খুতবা দেওয়া অবস্থাতেও এই সালাত পড়তে হবে, যার আদেশ স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম করেছেন।
জাবির ইবনু আ’ব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম জুমুআ’হর খুতবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় একটি লোক এসে উপস্থিত হল। (খুতবা চলাকালীন অবস্থাতেই) নাবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি (তাহিয়্যাতুল মাসজিদ এর) সালাত আদায় করেছ? সে বলল, না।
তিনি বললেন, ওঠো এবং (তাহিয়্যাতুল মাসজিদ এর) সালাত আদায় কর।
[সহীহ বুখারী ও মুসলিম, ইবনু মাজাহঃ ১১১২, তিরমিজিঃ ৫১০]
সুতরাং জুমুআ’হর দিনে খতিব সাহেব যদিওবা খুতবা দিতে থাকেন, তবুও মসজিদে প্রবেশ করে এই দুই রাকাত সালাত পড়তে হবে, কারণ রাসুলুল্লাহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদেশ সেই রকম।

এরপর যদি খুতবা শুরু না হয়, তাহলে ইচ্ছেমত দুই রাকাত, দুই রাকাত করে ‘নফল’ নামায পড়া যাবে অথবা অন্য কোন ‘সুন্নতী’ যিকির-আযকার, কোরআন তেলাওয়াত (বিশেষ করে সুরা কাহফ), দুয়া-দুরুদ পড়া যাবে।খতিব খুতবা দেওয়া শুরু করলে মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। এসময় যেকোন ধরণের কথা বলা, অন্য কাজ করা, মোবাইল দেখা বা বই পড়া সম্পূর্ণ হারাম, এমনকি পাশের জনকে চুপ করো এই কথাটা বলাও নিষিদ্ধ। ফরয ২ রাকাত সালাতের পর যদি মসজিদে সালাত আদায় করতে হয় তাহলে ২+২=৪ অথবা এক সালামে ৪ রাকাত সালাত পড়তে হবে, এটা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। আর মসজিদে না পড়ে বাসায় চলে আসলে, ২ রাকাত সালাত পড়াই যথেষ্ঠ হবে।
জুমুয়ার দিনে নিম্ন লিখিত কাজের ফজিলত-
জুমুয়ার দিনে সুরাহ কাহফ তেলাওয়াত করলে পরবর্তী জুমুয়াহ পর্যন্ত তার দিনগুলো নূরান্বিত হয়ে যাবে। এই দিনে একবার দুরুদ(দুরুদে ইব্রাহীম)পড়লে আল্লাহ তার প্রতি ১০ বার রহমত করেন। এই দিনে সংক্ষিপ্ত একটা সময় আছে ঐ সময়ে বান্দা যা চাইবে তাই দেওয়া হয়। কিছু আলেমের মতে সেই সময়টা হচ্ছে ইমাম খুতবার জন্য মিম্বরে বসা থেকে নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত সময়টা, অন্য আলেমদের মতে সেটা আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “জুমুআ’র দিনের বার ঘন্টার মধ্যে একটি বিশেষ মুহূর্ত রয়েছে, তখন কোন মুসলমান আল্লাহর নিকট যেই দুআ’ করে আল্লাহ তাই কবুল করেন। তোমরা এই মুহূর্ত্বটিকে আসরের শেষে অনুসন্ধান কর।” নাসাঈ, আবু দাউদঃ ১০৪৮, হাদীসটি সহীহ শায়খ আলবানী।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুম‘আর দিন গোসল করে সুগন্ধি মেখে মসজিদে এল ও সাধ্যমত নফল ছালাত আদায় করল। অতঃপর চুপচাপ ইমামের খুৎবা শ্রবণ করল ও জামা‘আতে ছালাত আদায় করল, তার পরবর্তী জুম‘আ পর্যন্ত এবং আরও তিনদিনের গোনাহ মাফ করা হয়’।. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৩৮১-৮২, পরিচ্ছন্নতা অর্জন ও সকাল সকাল মসজিদে যাওয়া, অনুচ্ছেদ-৪৪।
তিনি আরও বলেন, ‘জুম‘আর দিন ফেরেশতাগণ মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকেন ও মুছল্লীদের নেকী লিখতে থাকেন। এদিন সকাল সকাল যারা আসে, তারা উট কুরবানীর সমান নেকী পায়। তার পরবর্তীগণ গরু কুরবানীর, তার পরবর্তীগণ ছাগল কুরবানীর, তার পরবর্তীগণ মুরগী কুরবানীর ও তার পরবর্তীগণ ডিম কুরবানীর সমান নেকী পায়। অতঃপর খত্বীব দাঁড়িয়ে গেলে ফেরেশতাগণ দফতর গুটিয়ে ফেলেন ও খুৎবা শুনতে থাকেন’।মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৩৮৪, অনুচ্ছেদ-৪৪।

{{{সৌজন্যেঃ- দ্বীনি বোন মাহফুজা মনি}}}