সংগঠন করা সম্পর্কে

শাইখ মুহাম্মাদ ছালেহ আল-মুনাজ্জিদ (সঊদী আরব)।
তার শিক্ষক : শায়খ ইবনে বায (রহ:), শায়খ উছায়মীন (রহ:), শায়খ জিবরীন (রহ:) সহ আরও অনেকে।
.
প্রশ্ন : প্রচলিত বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের কোনো একটিতে যোগ দেওয়া কি একজন মুসলিমের উপর আবশ্যকীয়?
.
উত্তর : রাসূল (ছা:) ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির প্রতিটি কথা ও কাজের অনুসরণ করা আবশ্যকীয় নয়। বরং তিনি (ছা:) ছাড়া অন্য সকলের কথা গ্রহণীয় ও বর্জনীয়। ইমাম মালেক (রহ:) রসূল (ছা:) এর ক্ববরের দিকে ইশারা করে বলেন, এ ক্ববরের অধিবাসী ব্যতীত পৃথিবীর সকল ব্যক্তিরর কথাই গ্রহণীয় ও বর্জনীয়। আর নির্দিষ্ট কোনো দল বা সংগঠনে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে আমি বলব, আল্লাহ এবং তার রসূল (ছা:) সকল উম্মতকে জামাআতবদ্ধভাবে জীবন যাপন করার প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছেন। রসূল (ছা:) বলেন,
.
জামাআতের সাথে আল্লাহরর হাত থাকে
(তিরমিযী, হা/ ২১৬৭, শায়খ আলবানী ছহীহ বলেছেন)
তিনি আরো বলেন, তোমাদের উপর জামাআতবদ্ধ থাকা ফরয করা হল। কেননা নেকড়ে বাঘ একাকী দূরে অবস্থানকারী ছাগলকে খেয়ে ফেলে। (নাসাঈ, হা/৮৪৭)
.
রসূল (ছা:) আরো বলেন, শয়তান একক ব্যক্তির সঙ্গে থাকে এবং সে দুজন থেকে দূরে থাকে। (তিরমিয়ী হা/২১৬৫)।
সৎকাজের আদেশ এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ, আল্লাহর পথে দাওয়াত, শারঈ জ্ঞানর্জন, হক ও ধৈর্যোর উপদেশ ইত্যাদির মাধ্যমে আল্লাহ ও তার রসূল (ছা:) এর অনুগত্যের ক্ষেত্রে প্রতিটি মুসলিম ব্যক্তির একে অপরকে সহযোগীতা করা নিঃসন্দেহে শরীআতসম্মত কাজ। আর একতাবদ্ধভাবে এসব কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে শয়তানের কবল থেকে রক্ষা করতে পারে, যা উপরোল্লিখিত হাদীছসমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয়। সংবদ্ধভাবে এসব কাজ সম্পাদ মহান আল্লাহর নিন্মোক্ত বাণীর আওতায়ও পড়ে :
.
সময়ের কসম! নিশ্চয়ই মানুষ অবশয়ই মানুষ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। তবে তারা ব্যতীত, যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে এবং পরস্পরকে হক ও ধৈর্য্যের উপদেশ দিয়েছে। (আল-আছর)
.
তবে কোনো দল বা সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততা বলতে যদি তার প্রতি অন্ধভক্তি ও গোড়ামি বুঝায়। অর্থাৎ সে যে সংগঠনের করে, সেটিই একমাত্র হকের উপর আছে, পক্ষান্তরে অন্যগুলি ভ্রান্তির মধ্যে আছে বলে মনে করে এবং শুধুমাত্র নিজ সংগঠনের কর্মীদের সাথে আন্তরিকতা বজার রেখে চলে, আর অন্যদের সাথে শত্রুতা পোষণ করে, তাহলে এটি একদিকে যেমন মহা অন্যায় এবং যুলম। অন্যাদিকে তেমনি এগুলো দ্বারা উম্মতের মধ্যে বিভক্তি এবং দুর্বলতা দৃষ্টি ব্যতীত আর কিছুই হয় না। সেজন্য প্রতিটি মুমিন ব্যক্তির উচিৎ, সকল মুমিন ভাইয়ের সাথে বন্ধুত্ব ও আন্তরিকতা বজায় রেখে চলা। আল্লাহ বলেন,
.
তোমাদের বন্ধুতো আল্লাহ, তার রাসূল এবং মুমিনগণ। (আল মায়েদাহ ৫৫)
তিনি আরো বলেন,
মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই। (আল-হুজুরাত ১০)।
রাসূল (ছা;) বলেন, এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই।
.
অতএব, আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের মুলনীতির সাথে ঐক্যমতে পোষণকারী দল, জামাআত বা সংগঠনগুলির কোনো একটির মধ্যে হক সীমাবদ্ধ বলে মনে করা যাবে না। আল্লাহর পথে দাওয়াতের ক্ষেত্রে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার প্রয়োজন। প্রত্যেকটি মুমিন অন্যান্য মুমিনের সাথে বন্ধুত্ব ও আন্তরিকতা বজায় রেখে চলেবে। নিকটের হোক বা দূরের হোক সৎকাজে একে অপরকে সহযোগিতা করবে এবং অন্যায় কাজে সহযোগিতা থেকে বিরত থাকবে।
(সংগ্রহ করা হয়েছে : http:/islamqa.info/ar/
ref/12491)।