লজ্জা মানব জীবনের এক মহৎ গুণ

লেখক: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
▪▪▪▪▪▪▪▪

? ইবনে মাসঊদ উকবা ইবনে আমর আল আনসারী রা. হতে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
إذَا لَمْ تَسْتَحِ فَاصْنَعْ مَا شِئْت”
“লজ্জা না থাকলে তুমি যা খুশি তাই করতে পার।” (সহীহ বুখারী)
অর্থাৎ যখন তুমি লজ্জার পোশাক তোমার শরীর থেকে খুলে ফেলবে তখন যা খুশি কর। কিন্তু মনে রেখ, মহান আল্লাহ তোমার বিচারের জন্য কাঠগড়া প্রস্তুত করে রেখেছেন। সেখানে তোমার সকল অপকর্মের বিচার হবে। সে দিন তুমি লাঞ্ছিত হবে। তোমার কৃতকর্মের যথাযোগ্য শাস্তি তোমাকে পেতে হবে।
? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন:
الْحَيَاءُ خَيْرٌ كُلُّهُ
“লজ্জাশীলতার পুরোটাই কল্যাণময়।” (সহীহ মুসলিম/১৬৬)
? আনাস রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন:
مَا كَانَ الْحَيَاء فِي شَيْءٍ قَطُّ إِلَّا زَانَهُ ، وَمَا كَانَ الْفَخْرُ فِي شَيْءٍ , إِلَّا شَانَهُ ” . “লজ্জাশীলতা যে কোনো জিনিসকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে। আর নির্লজ্জতা যে কোন জিনিসকে কুৎসিত করে।” (সুনান তিরমিজি)

✴✴✴✴✴✴
♻- লজ্জা মানব জীবনের শ্রেষ্ঠতম অলংকার ও সর্বোৎকৃষ্ট ভূষণ। মুসলিম পুরুষ-নারী সকলের নিকটই এটি কাম্য। সৃষ্টিগতভাবে নারীরা লজ্জাশীল। কিন্তু ঈমানদার নারীর লজ্জাশীলতা তাকে আরও সৌন্দর্য মণ্ডিত করে তোলে। অনুরূপভাবে পুরুষকে করে তোলে আরও মহৎ ও উন্নত।
♻- এটি পবিত্র ও নির্মল ও মহৎ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের প্রমাণ বহন করে।
♻ – এটি ঈমানের একটি শাখা। যার লজ্জা নাই তার ঈমান নাই। যার লজ্জা কম তার ঈমান কম।
♻- লজ্জা মানুষকে তাকওয়া বান হতে শেখায়। কারণ, লজ্জাবোধের কারণে একজন মানুষ সব সময় ভাল কাজ করার চেষ্টা করে এবং সকল প্রকার খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে। একদিন লোক সমাজে যে কাজকে খারাপ চোখে দেখা হয় সেটা থেকে দূরে থাকে অপর দিকে মহান আল্লাহর নিকট যে কাজ ঘৃণ্য সেটা থেকেও সে দূরে অবস্থান করে।
♻- লজ্জাশীল মানুষ অন্যকে সম্মান করে আবার অন্যের নিকটও সম্মান কুড়ায়।

? পক্ষান্তরে————-
মানুষ যখন এই গুণটি হারাবে তখন তার জীবনের মহামূল্যবান গুণটি হারাবে।
⛔- যখন সে নির্লজ্জ হয়ে যাবে তার মাঝে সমাবেশ ঘটবে সকল প্রকার ঘৃণ্য স্বভাবের।
⛔-বেহায়া মানুষ পদে পদে লাঞ্ছিত হবে। তার কাছে কোন খারাপকে খারাপ মনে হবে না।
⛔-যে কোন কাজ সে নির্দ্বিধায় করতে শুরু করে। কাজটি যত খারাপই হোক না কেন তার কাছে সেটা ব্যাপার মনে হয় না।
⛔- তার ব্যক্তিত্ব বোধ, আত্মমর্যাদা, আত্মিক পরিচ্ছন্নতা, চারিত্রিক নির্মলতা সব বিদায়ে নেয়। এভাবেই একদিকে সে যেমন সমাজের চোখে হয়ে উঠে নোংরা স্বভাবের মানুষ অন্যদিকে মহান আল্লাহর দৃষ্টিতে হয় ঘৃণ্য।,
? আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদেরকে লজ্জাশীল হওয়ার তাওফীক দান করেন। নির্লজ্জতা থেকে হেফাজত করেন এবং সকল মহৎ গুণাবলী দ্বারা আমাদের চরিত্রকে সুষমা মণ্ডিত করেন। আমীন।
▪▪▪▪▪▪▪
লেখক: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।