রিয়া কখন হয়? কিভাবে হয়?

উত্তরঃ রিয়া মূলত চার প্রকার।

১. আমলটি করার আগে থেকেই এই রকম নিয়্যাত যে, আমি এটা ভিডিও করব, ছবি তুলব, মানুষকে দেখাব। এক কথায় প্রথম থেকেই আমল কারীর নিয়্যাত মানুষকে দেখানোর। শুধু মাত্র মানুষকে দেখানোর জন্যই সে কাজটি করছে। তাহলে তার সম্পূর্ণ আমল বাতিল বলে গণ্য হবে।

২. আমলটি মূলত মহান অাল্লাহর জন্যই করা। কিন্তু আমল শুরু করার পর মনে হল, মানুষকে দেখাব। মানুষ যেন ভাল বলে। তাহলে দেখতে হবে আমলটিকে কি রিয়া শুরু হওয়ার আগের এবং পরের মাঝে পার্থক্য করা যায়। যেমন, ১০০ বার সুবহানআল্লাহ গণার ৫০টির পরে রিয়া শুরু হল। তাহলে প্রথম ৫০টি সুবহানআল্লাহ গ্রহণযোগ্য হবে এবং পরের ৫০টি বাতিল বলে গণ্য হবে। আর যদি পার্থক্য করা না যায় যেমন দুই রাকাআত ফজরের ছালাত। তাহলে তার পুরো আমলটি বাতিল বলে গণ্য হবে। উল্লেখ্য যে, রিয়া মনের মাঝে উদিত হয় কিন্তু ব্যক্তি সেটাকে রিয়া মনে করে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে এবং তাকে খারাপ লাগে তাহলে এই সাময়িক উদয়ের জন্য তার আমলের কিছুই হবেনা ইনশাআল্লাহ।

৩. পুরো আমলটিই করেছে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ইখলাসে কোন প্রকার খাদ নাই। আমল করার পরে মানুষ তার প্রশংসা করছে এই রিয়া তার আমলের কোন ক্ষতি করবেনা ইনশাআল্লাহ।

৪. আমল প্রকাশ্যে করলেই রিয়া আসে বা আমলের ছবি তুললে ও ভিডিও করলে রিয়া হয় বিষয়টি এমন নয়। রিয়ার সর্ম্পক প্রকাশ্য অপ্রকাশ্যের সাথে নয় রিয়ার সর্ম্পক নিয়্যাতের সাথে। একজন কুরবানী করে নরমালী মানুষকে জানিয়েছে। আরেকজন হয়তো মানুষকে জানায়নি এই জন্যই যাতে সে পরবর্তীতে মানুষকে বলতে পারে ‘উমুক তো ভাল কাজ করে দেখিয়ে বেড়ায় আর আমি ভাল কাজ দেখানোর জন্য করিনা। গোপন রাখি। তাহলে এই ব্যক্তির গোপন রাখাটাই রিয়া হয়ে যাবে। সুতরাং কারো যদি আমলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিয়্যাত ঠিক থাকে এবং কোন প্রকার রিয়া না আসে। তাহলে আমল করার পর মানুষকে জানানোতে কোন সমস্যা নাই। তবে স্বাভাবিক ভাবে গোপন রাখাই উত্তম। কিন্তু কিছু কিছু পরিবেশে আবার প্রকাশ করা উত্তম হয়। এই বিষয়ে সার্বিক পরিস্থিতির উপর বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ওয়াল্লাহু আলাম। শায়খ সলিহ আল-উসাইমীনের কিতাবুত তাহওহীদের ব্যাখ্যার আলোকে লিখিত।

বিঃ দ্রঃ কেউ কেউ আছেন রিয়ার আশংকায় আমল পরিত্যাগ করেন যা চরম ভুল। রিয়ার আশংকা তৈরী করে শয়তান আপনাকে আমল থেকে বিরত রাখতে চায়। আপনি আমল করতে থাকুন এবং রিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে থাকুন! কিন্তু খবরদার আমল ছাড়বেন না বরং পারলে আরো বেশী আমল করুন!

***লিখেছেনঃ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাজ্জাক ভাই***