বৃহত্তম কবিরা গুনাহ কী ?

● বৃহত্তম কবিরা গুনাহ কী ?

==================================================================
শিরক ব্যতীত প্রত্যেক পাপের ক্ষেত্রেই আল্লাহ তাআলার ক্ষমা প্রাপ্তির একটি সম্ভাবনা আছে। তাওবাই শিরকের একমাত্র প্রতিকার। এমন বড় শিরক রয়েছে যা দীন ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা যে কোনো বিচারে সবচেয়ে বড় হারাম ও মহাপাপ। আবু বাকরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

{ﺃَﻻَ ﺃُﻧَﺒِّﺌُﻜُﻢْ ﺑِﺄَﻛْﺒَﺮِ ﺍﻟﻜَﺒَﺎﺋِﺮِ؟ » ﺛَﻼَﺛًﺎ، ﻗَﺎﻟُﻮﺍ : ﺑَﻠَﻰ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ : « ﺍﻹِﺷْﺮَﺍﻙُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ}

“আমি কি তোমাদেরকে বৃহত্তম কবীরা গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না সাহাবীগণ বললেন, অবশ্যই বলবেন, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে শিরক করা!

[সহিহ বুখারি, হাঃ নং ৫৯৭৬; সহিহ মুসলিম, হাঃ নং ৮৭]

শিরক ব্যতীত প্রত্যেক পাপের ক্ষেত্রেই আল্লাহ তাআলার ক্ষমা প্রাপ্তির একটি সম্ভাবনা আছে। তাওবাই শিরকের একমাত্র প্রতিকার। আল্লাহ বলেছেন,

{ﺇِﻥَّ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻟَﺎ ﻳَﻐۡﻔِﺮُ ﺃَﻥ ﻳُﺸۡﺮَﻙَ ﺑِﻪِۦ ﻭَﻳَﻐۡﻔِﺮُ ﻣَﺎ ﺩُﻭﻥَ ﺫَٰﻟِﻚَ ﻟِﻤَﻦ ﻳَﺸَﺎٓﺀُ}

“নিশ্চয় আল্লাহ তার সঙ্গে কৃত শির্ককে ক্ষমা করবেন না। তাছাড়া যত গুনাহ আছে তা তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন।
[ সুরা আন-নিসা, আয়াত ৪৮ ]
এমন বড় শিরক রয়েছে যা দীন ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এরূপ শিরককারী ব্যক্তি যদি ঐ অবস্থায় মারা যায় তাহলে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, অনেক মুসলিম দেশেই আজ শিরকের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ছে।

▒ সূরা আ’রাফের ৯৯নং আয়াতের তাফসীর। এবং সূরা হিজরের ৫৬ নং আয়াতের তাফসীর। ▒

১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

{أَفَأَمِنُوا مَكْرَ اللَّهِ فَلَا يَأْمَنُ مَكْرَ اللَّهِ إِلَّا الْقَوْمُ الْخَاسِرُونَ}. ﴿الاعراف : ۹۹﴾

‘‘তারা কি আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাঁচার ব্যাপারে নিশ্চিন্ত [নির্ভয়] হয়ে গেছে? বস্ত্ততঃ আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাঁচার ব্যাপারে একমাত্র
হতভাগ্য ক্ষতিগ্রস্ত ছাড়া অন্য কেউ ভয়-হীন হতে পারে না।’’
[ সুরা – আরাফ ৯৯ ]

২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন,

{وَمَنْ يَقْنَطُ مِنْ رَحْمَةِ رَبِّهِ إِلَّا الضَّالُّونَ : ألحجر }

‘‘একমাত্র পথভ্রষ্ট লোকেরা ছাড়া স্বীয় রবের রহমত থেকে আর কে নিরাশ হতে পারে?
[ সুরা – হিজর : ৫৬]

৩। ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল­ামকে কবীরা গুনাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জবাবে বলেছেন, ‘কবীরা গুনাহ হচ্ছে .

{ألشرك بالله، واليأس من روح الله، والأمن من مكر الله.}

‘‘আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া এবং আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করা।’’

৪। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেছেন,

{أكبر الكبائر : الإشراك بالله، والأمن من مكر الله والقنوط من رحمة الله واليأس من روح الله. (رواه عبد الرزاق}

‘‘সবচেয় বড় গুনাহ হচ্ছে : আল্লাহর শাস্তি হতে নিজেকে নিরাপদ মনে করা, আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হওয়া এবং আল্লাহর করুণা থেকে নিজেকে বঞ্চিত মনে করা।’’

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় .

১। সূরা আ’রাফের ৯৯নং আয়াতের তাফসীর।

২। সূরা হিজরের ৫৬ নং আয়াতের তাফসীর।

৩। আল্লাহর পাকড়াও থেকে ভয়হীন ব্যক্তির জন্য কঠোর শাস্তির ভয় প্রদর্শন
……………………………………………………….. শিরক ঘৃন্যতম গুনাহ এবং শিরকের পর সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহ

উসমান ইবনু আবূ শায়বা ও ইসহাক ইবনু ইব্রাহীম (রহঃ) আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যাক্তি বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহ কোনটি? তিনি বললেন, তুমি আল্লাহর জন্য সমকক্ষ সাব্যস্ত করবে অথচ তিনই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। সে বলল, তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তুমি তোমার সন্তানকে এ আশঙ্কায় হত্যা করবে যে, সে তোমার আহারের সঙ্গী হবে। সে বলল, তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হবে! এ উক্তির সমর্থনে আল্লাহ তাঁআলা নাযিল করেনঃ আর তারা আল্লাহর সঙ্গে কোন ইলাহকে ডাকে না, আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন, যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যে ব্যাক্তি এগুলো করে, সে শাস্তি-ভোগ করবে।

[ সূরা ফুরকানঃ ২৫ – ৬৮ ]
[ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) হাঃ ১৬০ হাদিসের মানঃ সহিহ ]
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
✥ মুলঃ শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
✥ অনুবাদঃ মু. সাইফুল ইসলাম
✥ সম্পাদকঃ ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
✥ সংগ্রহ, সংযোজন, পরিবেশনঃ মু. বায়েজীদ বিন উসমান .
——————————————————
● Present By : Bayzid Bin Osman