বিয়ের জন্য পাত্রী দেখার শরয়ীতসম্মত পদ্ধতি!

ইসলাম পাত্রী দেখার অনুমতি দিয়েছে প্রয়োজনের খাতিরে। উদ্দেশ্য এটা নয় যে, অন্যান্য জাতির মত নির্লজ্জ মেলামেশাও জায়েয। ওরা যেমন বিয়ের পূর্বে অবাধ মেলামেশা করে, হবু বরের হাত ধরে যথেচ্ছা ঘুরে বেড়ায়; মন আদান প্রদান করে, ভালোবাসা বিনিময় করে, সম্পূর্ণ অনুকূল হলে পরে গিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসে। ইসলামে এসবের অনুমতি নেই।
ইসলাম পাত্রী দেখার অনুমতি দিয়েছে প্রয়োজনের খাতিরে। উদ্দেশ্য এটা নয় যে, অন্যান্য জাতির মত নির্লজ্জ মেলামেশাও জায়েয। ওরা যেমন বিয়ের পূর্বে অবাধ মেলামেশা করে, হবু বরের হাত ধরে যথেচ্ছা ঘুরে বেড়ায়; মন আদান প্রদান করে, ভালোবাসা বিনিময় করে, সম্পূর্ণ অনুকূল হলে পরে গিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসে। ইসলামে এসবের অনুমতি নেই। তাছাড়া দেখার দ্বারা কী উদ্দেশ্য পূর্বের আলোচনায় তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। ইসলামে মহিলাদের সারা শরীরই সতর। শুধু চেহারা, হাতের তালু, পায়ের পাতা, এ তিনটি অঙ্গ ছাড়া দেহের অন্য কোনো অংশ পরপুরুষের সামনে খোলা জায়েয নেই। এ ব্যাপারে সামনে বিস্তারিত আসবে। ইসলামে এতটুকু দেখাই জায়েয। দেখতে গিয়ে গুপ্তচরবৃত্তি জায়েয নেই। ওকে কেউ দেখছে একথা তার জানারও প্রয়োজন নেই। শুধু পাত্রী সম্পর্কে জরুরী তথ্য জেনে নেয়াই যথেষ্ট।
ইমাম নববি বলেন, পাত্রের পক্ষে পাত্রীর শুধু চেহারা আর হাতের পাতা দেখা জায়েয। কেননা এদু’টি সতর নয়। চেহারা দেহের সৌন্দর্য বুঝায়। হাতের পাতা বুঝায় দেহের কমনীয়তা। এটা সত্য যে চেহারা দেখে কারো গঠন গড়ন অনেকাংশে অনুমান করা যায়। সৌন্দর্য অসৌন্দর্য সবই ধরা পড়ে চেহারায়। এমনকি বিচক্ষণ ব্যক্তিরা শুধু চেহারা দেখে আগামী জীবন সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারেন। আল্লাহপাক মানুষের চেহারাকে বানিয়েছেন দেহের দর্পণ। মনের দর্পণ বললেও অত্যুক্তি হবে না। এ ব্যাপারে মাওলানা সানাউল্লাহ পানিপথী রহ.-এর অভিমত হলো বিয়ের পূর্বে পাত্রীর চেহারা ও হাতের পাতা দেখা যায়। হাদিসেও এর সমর্থন পাওয়া যায়। ফুকাহায়ে কেরাম শরয়ী দলিলের ভিত্তিতে পায়ের পাতাও বাড়িয়েছেন। পাত্রীর কোন কোন অঙ্গ দেখা যায় এবং কতোটুকু দেখা যায় এ ব্যাপারে উলামায়ে কেরামের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে। চেহারা ও হাতের পাতার ব্যাপারে ইজমা তথা ঐক্যমত্য আছে, এতে কারো দ্বিমত নেই।
এখন প্রশ্ন হলো, শরিয়তে তো পরনারীকে দেখা জায়েয নেই। অতর্কিতে দৃষ্টি পড়ে গেলে অবশ্য ভিন্ন কথা। প্রথম দৃষ্টির অনুমতি আছে, দ্বিতীয়বার ইচ্ছাকৃত দৃষ্টি দেয়া জায়েয নেই। এমনিভাবে অপরিচিত নরনারী নির্জনে একান্তে মিলিত হওয়া চরমভাবে নিষিদ্ধ। অতি প্রয়োজনে লোকালয়ে কথাবার্তা বলা যেতে পারে। এধরনের আরো বহু বাধা-নিষেধ আছে শরিয়তে। উত্তরে বলা হবে, বিবাহপূর্ব কনে দেখার যে বিধান তা একান্তই প্রয়োজনবশত, ন্যায়-নিষ্ঠার সাথে ও সীমার ভিতরে। মেয়েকে তার নিজের ঘরে দৈনন্দিনের আটপৌরে পোশাকে অভিভাবকের উপস্থিতিতে শুধু চেহারা হাত পা দেখা। শর্ত হলো, চোখ থাকবে পবিত্র, দিল থাকবে পাক। আল-আরফুশ শাযিতে আছে, প্রথম দেখার সময় নিয়ত ঠিক রাখবে, পরে আল্লাহ ভরসা।’ এসব দেখাদেখির উদ্দেশ্য হলো দাম্পত্য জীবনে যেনো মধুর হয়, মিল-মুহাব্বত পয়দা হয়। উটকো ঝামেলা, বিবাদ বিসংবাদ বা ওজর আপত্তির সুযোগ না থাকে। বিয়ের মূল উদ্দেশ্য সাধিত হয়।