ইন্টারনেটে দাওয়াতীকাজের ১৬টি পদ্ধতি

ইন্টারনেটে দাওয়াতীকাজের ১৬টি পদ্ধতিঃ

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

সম্মানিত বন্ধুগণ, প্রত্যেক মুসলমানের জন্য
দ্বীন প্রচার করা আবশ্যক। প্রত্যেকেই তার
জ্ঞান, যোগ্যতা ও সাধ্যানুযায়ী দ্বীন প্রচারে
অংশ গ্রহণ করবেন। দ্বীন প্রচার করার জন্য
আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম আমাদেরকে আদেশ করেছেন এবং এ
জন্য অগণিত সোয়াবের কথা কুরআন-হাদীসে
বর্ণিত হয়েছে। যেমন, আল্লাহ তায়ালা বলেন:
“তোমার রবের পথে ডাক হেকমত এবং উত্তম
উপদেশের মধ্যমে এবং তাদের সাথে বিতর্ক কর
সবোর্ত্তম পন্থায়।” (আন নাহাল: ১২৫)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আমার
পক্ষ থেকে একটি আয়াত হলেও পৌঁছিয়ে
দাও।” (সুনান তিরমিযী, সহীহ)
আল্লাহর দ্বীনকে প্রচার করার মর্যাদা অনেক
বেশি। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন:
”যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে
এবং বলে, আমি মুসলমানদের অন্তর্ভূক্ত, তার কথার
চেয়েউত্তম কথা আর কার হতে পারে??” (হা মীম
সাজদাহ: ৩৩)
“তোমার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা যদি একটি মানুষকেও
হেদায়াত দেন তবে তা তোমার জন্য অনেক লাল
উঁট পাওয়া থেকে উত্তম।” (সহীহ বুখারী)
”যে ব্যক্তি মানুষকে হেদায়েতের দিকে আহবান
করে সে ব্যক্তি ওই সকল লোকের মতই
সোয়াবের অধিকারী হয় যারা তা অনুসরণ করে।
কিন্তু যারা অনুসরণ করে তাদের সোওয়াবের
কোন ঘাটতি হবে না।” (সহীহ মুসলিম)
ইন্টারনেটে দাওয়াতী কাজ করার পদ্ধতি সম্পর্কে
অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন। দাওয়াতী কাজে
আগ্রহী অনেক ভাই নেট ব্যবহার করে কিন্তু
পদ্ধতি না জানার কারণে তা যথার্থভাবে দাওয়াতের
কাজে ব্যবহার করতে পারে না। তাদের জন্য আমার
সামান্য অভিজ্ঞতার আলোকে অতি সংক্ষেপে ১৬টি
পয়েন্ট তুলে ধরলাম। যথা:
১) ভাল মানের সহীহ আকীদা ভিত্তিক ওয়েব সাইট
প্রচার ও প্রসার করা।
২) ইসলামের বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিষয় ভিত্তিক
লেখা বা লেখার লিংক প্রচার। যেমন, হজ্জ, সিয়াম,
মুহাররম ইত্যাদি বিষয়ে।
৩) কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক ভাল মানের ভিডিও ইউটিউব,
ফেসবুক বা অন্যান্য ভিডিও সাইটে আপলোড করা।
৪) নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে একাধিক লিংক একত্রিত করে
তা প্রচার করা।
৫) ইন্টারনেটে ফেসুবক, টুইটার ইত্যাদি মাধ্যমে
মানুষকে কোন বিশেষ আমল সম্পর্কে স্মরণ
করিয়ে দেয়া। যেমন, মুহাররমের ১০ তারিখের
রোযা, আরাফাতের রোযা, আইয়ামে বিয়ের
রোযা, বিশেষ দুয়া ইত্যাদি।
৬) সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন বিদআত ও শিরক ও অন্যায়
সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। যেমন, কবর
পুজার ভয়াবহতা, তাবিজ-কবজ, রিং, সুতা ব্যাবহার, মীলাদ,
ওরস পালন ইত্যাদি।
৭) বিভিন্ন ব্লগে ইসলাম নিয়ে লেখা-লেখি করা।
৮) নিজস্ব ওয়েব সাইট তৈরি করে তাতে লেখা
প্রকাশ করা।
৯) অন্য কোন ওয়েব সাইটের এডমিন হয়ে তাতে
লেখা প্রকাশ করা।
১০) ফেসবুকে নিজস্ব টাইমলাইনে, আলাদা পেজ বা
গ্রুপ তৈরি করে তাতে ইসলাম বিষয়ক লেখা বা ছবি তৈরি
করে তা পাবলিশ করা। (তবে প্রাণীর ছবি প্রচার করা
থেকে বিরত থাকা উচিৎ)।
১১) ফেসবুকে অন্যের পরিচালিত ইসলামিক পেজ
এর এডমিন হয়ে বা কোন ইসলামিক গ্রুপ এ যুক্ত
হয়ে সেখানে ইসলাম বিষয়ে লেখা।
১২) ফেসবুকে ভাল মানের ইসলামি পোস্টে লাইক,
শেয়ার বা মন্তব্যের মাধ্যমে অন্যদের নিকট তা
ছড়িয়ে দেয়া।
১৩) গুগল বা ইয়াহুতে ইসলামিক ইমেইল গ্রুপ তৈরি
করে তাতে অংশ গ্রহণ করার জন্য মানুষকে ইনভাইট
করা।
১৪) বন্ধুদের ইমেইল সংগ্রহ করে সেগুলোতে
তাদের আগ্রহের ভিত্তিতে ইসলামিক আর্টিকেল বা
উপকারী বিষয়াদি ইমেইল করা। কেউ এতে অনাগ্রহ
দেখালে তার কাছে ইমেইল না পাঠানোই ভাল।
১৫) ইসলামী বক্তৃতা দেয়ার যোগ্যতা থাকলে
ইসলামী ভয়েস চ্যাট রুম সমূহে জয়েন করে
সেখানে ইসলাম বিষয়ে কথা বলা।
১৬) স্কাইপিতে গ্রুপ তৈরি করে সেখানেও বক্তৃতা,
লিংক শেয়ার ইত্যাদি মাধ্যমে দাওয়াতি কাজ করার
সুযোগ রয়েছে।
এগুলো ছাড়াও আর কি কি পদ্ধতি অবলম্বন করা যায় দয়া
করে আপনাদের অভিজ্ঞতার আলোকে
মন্তব্যের মাধ্যমে জানান। হয়ত আপনার দেয়া
পদ্ধতিটি কোন ব্যক্তি পছন্দ করে বাস্তবায়িত
করতে পারে। সেক্ষেত্রে তা আপনার জন্য
একটি সদকায়ে জারিয়া হিসেবে আল্লাহর দরবারে
গৃহীত হয়ে যেতে পারে।