আল্লাহ্‌ তা’আলাকে শুধু অস্বীকার করার নামই কুফর নয়, নানা রকম কথা ও কাজের দ্বারাও কুফরের মত ভয়াবহ গুনাহ হয়ে যেতে পারে

আল্লাহ্‌ তা’আলাকে শুধু অস্বীকার করার নামই কুফর নয়, নানা রকম কথা ও কাজের দ্বারাও কুফরের মত ভয়াবহ গুনাহ হয়ে যেতে পারে। আসুন, আমরা কুফর সম্পর্কে জেনে নিজেরা কুফর থেকে বেঁচে থাকি এবং অন্যদেরও সাবধান করি।

* নিজের ঈমান রক্ষা করার জন্য নিচের হাদিসগুলো সবার জানা অত্যন্ত জরুরি। দয়া করে হাদিসগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং সবার সাথে শেয়ার করুনঃ-

আবু মালিক থেকে তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলল এবং আল্লাহ্‌ ব্যতিত অন্য সব উপাসনা প্রত্যাখ্যান করল, সে তার জান ও মালকে নিরাপদ করে নিয়েছে (অর্থাৎ তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হারাম)। তার চূড়ান্ত হিসাব নিকাশ আল্লাহ্‌র ওপর ন্যস্ত।
[সহীহ মুসলিম, প্রথম অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং- ৩৮]

আবু মূসা আশআরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! কোন (মুসলিমের) ইসলাম সবচেয়ে ভালো? তিনি বললেনঃ যার জিহ্বা ও হাতের অনিষ্ট থেকে মুসলমানগণ নিরাপদ থাকে তার ইসলাম সবচেয়ে ভালো।
[সহীহ মুসলিম, প্রথম অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং- ৭১]

ইবনে উ’মর (রা) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোন ব্যক্তি তার (মুসলিম) ভাইকে কাফের বলে তা তাদের উভয়ের একজনের ওপর অবশ্যই বর্তাবে।
[সহীহ মুসলিম, প্রথম অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং- ১২৩]

আবদুল্লাহ ইবনে দীনার থেকে বর্ণিত। তিনি ইবনে উ’মর (রা) কে বলতে শুনেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোন লোক তার (মুসলিম) ভাইকে কাফের বলে তা তাদের দু’জনের যে কোন একজনের ওপর পতিত হবে। সে যাকে বলেছে যদি সে সত্য সত্যই কাফের হয়ে থাকে, তাহলে তো ঠিকই বলেছে। অন্যথায় কুফরী তার দিকেই প্রত্যাবর্তন করবে।
[সহীহ মুসলিম, প্রথম অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং- ১২৪]

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমানকে গালাগালি করা ‘ফিসক’ বড় গুনাহ। আর তার সাথে যুদ্ধ ও মারামারি করা কুফরী। যুবাঈদ বলেনঃ আমি আবু ওয়াইলকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি সরাসরি আবদুল্লাহ (রা) থেকে শুনেছেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ। শো’বার হাদীসে আবু ওয়াইলকে যুবাঈদ যে কথা জিজ্ঞেস করেছিলেন তার উল্লেখ নেই।
[সহীহ মুসলিম, প্রথম অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং- ১২৯]

জারীর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজ্জের দিন আমাকে বললেনঃ জনতাকে চুপ করাও (আমি কিছু কথা বলবো)। অতঃপর তিনি বললেনঃ আমার পরে তোমরা পরস্পর মারামারি ও যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত হয়ে কুফরীর পথে ফিরে যেয়োনা।
[সহীহ মুসলিম, প্রথম অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং- ১৩১]

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বিদায় হজ্জের দিন (ভাষণে) বলেছেনঃ সাবধান! সাবধান! আমার (ওফাতের) পরে তোমরা অন্তর্দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে কুফরীর দিকে ফিরে যেয়োনা।
[সহীহ মুসলিম, প্রথম অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং- ১৩৩]

আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষের মধ্যে এমন দুটি স্বভাব রয়েছে যা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। কারো বংশ তুলে তিরস্কার করা এবং মৃতের জন্য বিলাপ করে কান্নাকাটি করা।
[সহীহ মুসলিম, প্রথম অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং- ১৩৫]

আবু সুফিয়ান থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জাবির (রা) কে বলতে শুনেছি, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ ব্যক্তি এবং শিরক ও কুফরের মাঝখানে নামায ছেড়ে দেয়াই হচ্ছে ব্যবধান।
[সহীহ মুসলিম, প্রথম অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং- ১৫৪]

আবু যুবাইর (র) জাবির ইবনে আবদুল্লাহকে (রা) বলতে শুনেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ ব্যক্তি এবং শিরক ও কুফরের মাঝখানে নামায বর্জন করাই হচ্ছে ব্যবধান।
[সহীহ মুসলিম, প্রথম অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং- ১৫৫]

আল্লাহ্‌ তা’আলা আমাদের সবাইকে সকল প্রকার কুফর-শিরক ও বিদ’আত থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন। আমীন।
===============0========