আমাদের খুব পরিচিত কিছু স্বভাব-যার কারনে আমরা জাহান্নামী হতে পারি

১. আমাকে কেউ একজন একটা কথা বলে বললো কাউকে না বলার জন্য। কাউকে না বলার শর্তে আমি সেটা আরেকজনকে বলে দিলাম। এটা আমানতের খিয়ানত। এটা মুনাফেকি করা। জাহান্নামের উদ্বোধন হবে মুনাফিক দিয়ে। কাফের, মুশরিক দিয়ে নয়।
[সূরা নিসা-৪/১৪৫, বুখারী-৩৩]
.
২. আমি গুলশানে দাঁড়িয়ে কাউকে মোবাইল ফোনে বললাম আমি তো মতিঝিল চলে এসেছি। এটাও মুনাফেকি।
[সূরা নিসা-৪/১৪৫, বুখারী-৩৩, ইবনে হিব্বান-৪১৮৭]
.
৩. কিছুদিন আগেও তুই আমার কাছে আসতি একটা চাকরির জন্য। চাকরি দিলাম। আজকে টাকা হয়েছে আর সব ভুলে গেলি? আল্লার রাসুল (সাঃ) বলেছেন-এই জাতীয় কথা বলার (অর্থাৎ, উপকার করে খোঁটা দেয়া) পরিণাম জাহান্নাম।
[সূরা বাকারা-২/২৬৪, মিশকাত-২৭৯৫. আবূ দাঊদ-৪০৮৭, নাসাঈ-২৫৬৩, তিরমিযী-১২১১, ইবনু মাজাহ-২২০৮]
.
৪. রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় একটা মেয়ের দিকে তাকালেন। মেয়েটা ইসলামি পোশাক পড়া না থাকলে উভয়েই যিনাকারী।
[সূরা নূর-৩০,৩১, বুখারী-৬২৪৩, মুসলিম-৬৫১২]
.
৫. আপনি জীবিত এবং সুস্থ্য থাকা অবস্থায় আপনার স্ত্রী বাজার করে অথবা বেপর্দা ঘুরে। এই পুরুষ দাইয়ূস। এর অবস্থান সরাসরি জাহান্নাম।
[মুসনাদে আহমাদ-৫৮৩৯, সহিহুল জামে-৩০৫২]
.
৬. সন্তান বড় হয়েছে অথচ তাকে পর্যাপ্ত ধর্মীয় শিক্ষা দেননি। সালাতের জন্য তাগাদা দিচ্ছেন না। এই সন্তান তার বাবার ঘাড়ে সমস্ত দোষ চাপিয়ে জান্নাতে চলে যেতে পারে। বাবা আটকে যাবে।
[আবূ দাউদ-৪৯৫, মুসনাদে আহমাদ-৬৬৮৯]
.
৭. আপনার (পুরুষের) পোশাক পায়ের টাখনুর নীচে থাকে। বিনা বিচারে জাহান্নামে যাওয়ার প্রস্তুতি আজই নিয়ে রাখেন।
[আবূ দাঊদ-৪০৮৭, নাসাঈ-২৫৬৩]
.
৮. কারও হক্ব নষ্ট করেছেন বা দুর্নীতি করে টাকা ইনকাম করেছেন। যদি আখিরাতে বাঁচতে চান তবে যার টাকা বা হক্ব তাকে ফেরত দিন। আখিরাতে সে আপনার সমস্ত নেক আমল ধরে টান দিবে।
[ইবনু মাজাহ, হাদিসে কুদসি-১৪২, মিশকাত-৩৭৫৩, তিরমিযী-২৪১৮]
.
৯. বয়স ছিলো, ক্ষমতাও ছিলো। রিক্সাওয়ালাকে বা কাজের লোককে একটা চড় মেরেছিলেন। এর নাম জুলুম। জাহান্নাম থেকে বাঁচতে হলে তার হাত ধরে ক্ষমা চেয়ে নিন। একদিন আপনার আমলনামা সে টান দিবেই। [সূরা আরাফ-৭/৪৪, সূরা শুরা-৪২, ৪৩, হাদিসে কুদসি-১৪২, তিরমিযী-২৪১৮]
.
১০. (মহিলারা) গায়ে সুগন্ধি মেখে পর পুরুষের পাশ দিয়ে হেঁটে গেছেন। এরকম কাজ জীবনে যতবার করেছেন ততবার আপনি যিনার পাপ করেছেন। [তিরমিযী-২৭৮৬, সহীহুল জামে-৪৫৪০, মুসনাদে আহমাদ-১৯৩৬]
.
আর যতবার আপনি ভ্রু উঠিয়েছেন ততবার আপনি আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এর নিকট হতে অভিশাপ পেয়েছেন।
[বুখারী-৫৯৪৮, মুসলিম-২১২৪, আবু দাউদ-৪১৬৮, তিরমিযী-২৭৮২]
.
১১. যতবার আপনি সুদ খেয়েছেন বা দিয়েছেন বা সুদের কাজে সহযোগিতা করেছেন ততবার আপনি আপনার মায়ের সাথে যিনার পাপ করেছেন।
[মিশকাত-২৮০৭, ২৮২৬]
.
১২. যতবার আপনি কোনও অমুসলিমকে খাইয়েছেন বা উপকার করেছেন ততবার আপনি দানের ছাওয়াব পেয়েছেন। আর যতবার আপনি তার ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়েছেন বা তাকে এসএমএস দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ততবার আপনি শিরক করেছেন। আখিরাতে বিচার ছাড়াই আপনি জাহান্নামী। তাওবা করলে বেঁচে যাবেন।
[সূরা আলে ইমরান-৩/৮৫, মিশকাত-৪৩৪৭, ৪৬৮৯, তিরমিযী-২৬৯৫, আবূ দাউদ-৪২৫২, মাজমুউ ফাতাওয়া ওয়া রাসায়িলিস শাইখ ইবনে উছাইমীন ৩/৩৬৯]
.
১৩. যতবার আপনি জন্মদিন, মৃত্যুদিন, বিবাহ বার্ষিকী, কুলখানি, চেহলাম বা কোনও দিবস পালন করেছেন ততবার আপনি বিদাত করেছেন। রাসুল (সাঃ) এর সুপারিশ আপনার জন্য প্রযোজ্য নয়।
[বুখারী-৫৭৭২, মুসলিম-১৭১৮, মিশকাত-১৪০]
:
.
________________________
উপরোক্ত গুনাহসমূহের মধ্যে যেগুলো আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত সেগুলো তাওবা করলে ক্ষমা হবে ইনশাআল্লাহ। কারন আল্লাহ বলেনঃ
“নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে। এছাড়া যাকে ইচ্ছা, ক্ষমা করেন। যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে সুদূর ভ্রান্তিতে পতিত হয়। [সূরা নিসা: ৪/১১৬]

:
আর গুনাহ যদি বান্দার সাথে সম্পৃক্ত হয় তবে তা বান্দার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় আখিরাতে তিনি মহাবিপদে পড়বেন।